বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: নির্বাচনে (WB Election 2021) বিপর্যয়ের পর যাঁরা পার্টির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (Biman Basu)। জেলা থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরই ব্যবস্থা বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বা তন্ময় ভট্টাচার্যরা যে ছাড় পাবেন না, আলিমুদ্দিনের তরফে সেই ইঙ্গিত মিলেছে।
১৯৪৬ সালের পর ২০২১। এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় সদস্যহীন বাম ও কংগ্রেস। খারাপ ফলাফল নয়, একে নির্বাচনী বিপর্যয় বলে মনে করছে আলিমুদ্দিন। ফলাফল বেরতেই প্রথমে মুখ খোলেন উত্তর দমদমের সিপিএম প্রার্থী ও প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাটার্য। জোটের শর্ত উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নিচুতলার মতামত না নিয়ে আলিমুদ্দিনের একতরফা সিদ্ধান্ত ভরাডুবির কারণ বলে প্রকাশ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন পার্টির উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তন্ময়। পার্টির একাংশের সমর্থন পেলেও অনেকেই প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তোলেন।
[আরও পড়ুন: কোভিড মোকাবিলায় তৎপরতা, শপথ নিয়েই কাজে হাত দিলেন তারকা বিধায়ক রাজ]
তন্ময়ের পর পার্টির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন প্রাক্তনমন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ও। এবারও রায়দিঘি থেকে পরাজিত হন তিনি। জোট নিয়ে কান্তির প্রশ্ন, বিহারে লালুপ্রসাদের দল আরজেডি বা তামিলনাড়ুর ডিএমকের মতো দুর্নীতিগ্রস্থ দলের সঙ্গে জোট করতে পারলে এখানে তৃণমূলের সঙ্গে জোটে কেন আপত্তি? আবার অশোক ভট্টাচার্যর অভিযোগ, আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট করে সংখ্যালঘু ভোট তো এলই না উলটে চলে গেল হিন্দু ভোটও।
তিন নেতার মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়ে আলিমুদ্দিন। তন্ময়কে শো-কজ করা হয়। জবাব পাওয়ার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সিপিএম নেতৃত্ব। যদিও কান্তি বা অশোক প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছে আলিমুদ্দিনের ভোট ম্যানেজাররা। এদিন বিমান বসুকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, এই সব বিদ্রোহী নেতাদের সঙ্গে কথা বলছে জেলা নেতৃত্ব। রিপোর্ট এলে তবেই সিদ্ধান্ত নেবে আলিমুদ্দিন। পার্টির সংবিধান অনুযায়ী বিদ্রোহী তিন জনই যেহেতু জেলা কমিটির সদস্য তাই ব্যবস্থা নিতে গেলে আলিমুদ্দিনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জেলা কমিটি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে শুধুমাত্র শাস্তির সুপারিশ করতে পারবে।
[আরও পড়ুন: করোনার দাপটে রবিবার থেকে তারকেশ্বর মন্দিরে নিষিদ্ধ ভক্তদের প্রবেশ]
তবে নির্বাচনে বিপর্যয়ের দায় মাথায় নিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু পদত্যাগ করছেন। এমন খবরকে আজগুবি গল্প বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিমান বসু। এদিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভোট পরবর্তী হিংসায় সংযুক্ত মোর্চা হতাহত কর্মীদের তালিকা স্বরাষ্ট্র সচিবকে পাঠান ফ্রন্ট চেয়ারম্যান। সেই সঙ্গে সব দলের নিহত এবং আহতদের পরিবারতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান তিনি। শীতলকুচির নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলে কেন অন্যরা পাবেন না, প্রশ্ন তোলেন বিমান বসু।