সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোদির মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীপদের ভাগাভাগি সম্পন্ন। কিন্তু এবার টানাপোড়েন শুরু হল স্পিকার পদ নিয়ে। বিজেপি চাইছে এই পদে বসুক অন্ধ্রপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি দগ্গুবতী পুরন্দেশ্বরী। অন্যদিকে, এনডিএ জোটের 'সোনার টুকরো' শরিক টিডিপি চাইছে তাদের দলের কোনও সদস্যকে দেওয়া হোক গুরুত্বপূর্ণ এই পদ। এই ইস্যুতেই এবার এনডিএ জোটের অন্দরে দড়ি টানাটানি শুরু হল বিজেপি ও টিডিপির।
মোদি-৩ মন্ত্রিসভার ভাগাভাগিতে টিডিপির তরফে আগেই বিজেপির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ৪ মন্ত্রী ও লোকসভা স্পিকারের পদ। যদিও চারের পরিবর্তে ২টি মন্ত্রক দেওয়া হয়েছে টিডিপিকে। রামমোহন নায়ডু পূর্ণমন্ত্রী এবং চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি প্রতিমন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই প্রস্তাব না মানায় অখুশি টিডিপি। তারা চায় স্পিকার পদ দেওয়া হোক তাঁদের। তবে এই পদে বিজেপির প্রথম পছন্দ অন্ধ্রপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি দগ্গুবতী পুরন্দেশ্বরী। বিজেপি সূত্রের খবর, এই পদ কোনওভাবেই হাতছাড়া করতে নারাজ বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, জোড়া-তাপ্পির এনডিএ সরকারে ভবিষ্যতে যদি চন্দ্রবাবু নাইডু ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে হাত মেলায় সেক্ষেত্রে স্পিকার পদ তাদের হাতে থাকলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে মোদি-শাহদের। পরবর্তী সময়ের কথা মাথায় রেখেই স্পিকার পদ নিয়ে টিডিপির সঙ্গে দড়ি টানাটানি শুরু হল বিজেপি।
[আরও পড়ুন: শপথ মিটতেই বিদ্রোহের সুর মোদি ক্যাবিনেটে! গোপী বলছেন, ‘এই পদ চাই না’]
এদিকে বিজেপির তরফে স্পিকার পদের মুখ হিসেবে উঠে আসা দগ্গুবতী পুরন্দেশ্বরী ২০২৩ সাল থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ বিজেপির সভাপতি। এমনকী তেলেগু দেশম পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এনটিআর-এর কন্যা তিনি। একটা সময়ে চন্দ্রবাবুর সঙ্গে চরম শত্রুতা থাকলেও ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে টিডিপি ও জনসেনার সঙ্গে বিজেপির জোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন দগ্গুবতী। তার সুফলও স্পষ্ট, এবার অন্ধ্র থেকে এনডিএ পেয়েছে ২১ জন সাংসদ। যার মধ্যে ১৬জন টিডিপির। বিধানসভা নির্বাচনেও এখানে ১৬৪ আসন জিতে এনডিএ সরকার হচ্ছে সেখানেও। সূত্রের খবর, এতদিন অন্ধ্রে খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে থাকা বিজেপিকে এই অসম্ভব সাফল্য এনে দেওয়ায় বিজেপির সভাপতি দগ্গুবতীকে পুরস্কৃত করতে চাইছেন মোদি-শাহরা। তবে সেখানে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়ালেন চন্দ্রবাবু।
[আরও পড়ুন: কার্বাইন বনাম সার্ভিস রিভলবার! রানিগঞ্জে ডাকাতদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ ‘দাবাং’ আইসির]
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩০৩ আসন জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল বিজেপি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতা অনেকখানি কমেছে বিজেপির। মাত্র ২৪০ আসন পাওয়া বিজেপি এবার শরিকদের সাহায্য নিয়ে সরকার গড়ছে। তিন দশকের পুরনো দুয়োরানি থাকা সঙ্গীরা গত ১০ বছরে ব্রাত্য থাকার পর হঠাৎ করেই পাওয়া শুরু করেছে বাড়তি গুরুত্ব। আসলে সহজ পাটিগণিতে প্রধানমন্ত্রী বুঝে গিয়েছেন, সরকার চালাতে গেলে এবার সঙ্গীদের চটানো যাবে না। তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে মন্ত্রিসভাতেও। এবার জোট সঙ্গীদের ছাড়তে হয়েছে অনেকগুলি মন্ত্রক। পাশাপাশি এই জোটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শরিক হয়ে উঠেছে টিডিপি ও জেডিইউ। এই দুই দলেরই মোট আসন ২৮। এই সংখ্যাই ম্যাজিক ফিগার ছোঁয়ার অন্যতম কারিগর। তাই এই দুই দলকে এবার বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি। তবে স্পিকার পদের দাবি রাখা টিডিপিকে সেটি ছেড়ে দেওয়া হবে কিনা সেটাই এখন দেখার।