অসিত রজক ও তিতুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ভোটের প্রচারে বেরিয়ে পুলিশকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ-এর বিরুদ্ধে। বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি আটকে হামলার অভিযোগে রীতিমতো আঙুল উঁচিয়ে পুলিশের উদ্দেশে সৌমিত্রকে বলতে শোনা গেল, "তৃণমূলের হয়ে দালালি করছেন?"
বিজেপির অভিযোগ, সোমবার পাত্রসায়র থানার বেলুট গ্রামে বিজেপির ভোট প্রচার এবং দলীয় একটি কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল। সেখানে যোগদান করার জন্য যাচ্ছিলেন বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan) এবং সোনামুখী বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামী। তিনি বেলুট গ্রামে ঢুকতেই বেলুট রসুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান প্রধান তথা অঞ্চল সভাপতি তাপস বাড়ি বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের গাড়ি ও কনভয় আটকে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এরপরই দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক মারামারি হয়। বিজেপির অভিযোগ, সোনামুখী বিধানসভার বিজেপির কনভেনার তাপস মিত্র সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী আহত হন। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। এরপর ঘটনাস্থলে পাত্রসায়র থানার পুলিশ কর্মী দেখে রীতিমতো চটে যান বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ।
[আরও পড়ুন: ‘সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছেন’, নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েও সুপ্রিম ভর্ৎসনার মুখে রামদেব]
পুলিশ কর্মীদের উদ্দেশে হুঙ্কার দিয়ে তিনি বলেন, “তৃণমূলের হয়ে দালালি করছেন? চারটে কুড়িতে মেসেজ করেছি। চারটে আঠাশেও তৃণমূলের সাহস কী করে হয় পতাকা ছেঁড়ার। সাংসদের গাড়ির সামনে বিক্ষোভ করতে আসছে। এই ভাবে চলতে পারে না। এটা পঞ্চায়েত ভোট নয়, লোকসভা ভোট। পরিষ্কার বলছি, একটাও অশান্তি হলে কেউ ছেড়ে কথা বলবে না।” পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকে সৌমিত্র বলেন, "বেলুটে কর্মসূচি উপলক্ষে দলীয় পতাকা লাগানো হয়েছিল। সেগুলো ছিঁড়ে দিয়েছে তৃণমূল। আমাদের কর্মীরা, তার প্রতিবাদ জানালে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সন্দেশখালি করে দেওয়ার হুমকি দেয় মহিলাদেরকে। এমন কি আমার গাড়িতেও অ্যাটাক করার চেষ্টা করে। পুলিশকে বারবার জানিয়ে কোন লাভ হয়নি। এটা পঞ্চায়েত ভোট নয়, এটা লোকসভা ভোট। তাই পুলিশকে তৎপর হওয়ার কথা বলছিলাম।"
[আরও পড়ুন: কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে ইডির তৎপরতায় কংগ্রেসের ‘হাত’! বিস্ফোরক বিজয়ন]
এদিকে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের পাত্রসায়ের ব্লক সভাপতি প্রভাত মুখোপাধ্যায় বলেন, "বেলুটে আমাদের স্থানীয় এক নেতাকে বিজেপি কর্মীরা মারধর করে। আমাদের কেউ ওদের পতাকা ছেড়েনি, মারধরও করেনি।" পাশাপাশি তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল বলেন, "পাত্রসায়েরের ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত নই। সারাদিন প্রচারে ছিলাম আমি। তবে যেটা আমি শুনেছি বিজেপি প্রার্থীর নেতা হিসেবে দর নেই অভিনেতা হিসেবে দর বাড়াচ্ছেন। গত ১০ বছরে উনি কোনও কাজ করেননি। পাত্রসায়রে নিজের লোকদের দিয়ে নিজেদের লোককে মার খাইয়ে নিজেই অশান্তি তৈরি করেছেন। এরপর পুলিশকে হুমকি দিয়েছেন। উনি আসলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। গত সাড়ে ৪ বছরে ওনাকে এলাকার লোক দেখতে পায়নি এই ২-৩ মাস ভোটের লোভে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তাতে লাভ কিছু হবে না।"