স্টাফ রিপোর্টার: বাংলায় বিজেপি (BJP) যে এখনও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেনি এবং রাজভবন নির্ভর হয়েই রাজ্য নেতারা চলায় ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় গেরুয়া নেতৃত্ব। শুধু তাই নয়, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সাংগঠনিকভাবে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে বারংবার নিজেদের মুখ লুকোতে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বঙ্গ বিজেপিকে। বস্তুত এই কারণে কথায় কথায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ ও ৩৫৬-র দাবি ছেড়ে আত্মনির্ভর হওয়ার বার্তাও সম্প্রতি কলকাতা সফরে এসে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের দিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপরও ছবিটা বদলায়নি। উলটে ছুতোনাতায় সপ্তাহে দু’-তিনবার রাজভবনে গিয়ে কাঁদুনি গাওয়া বেড়ে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের।
এর মধ্যেই সদ্য নানা পুর এলাকার ছ’টি ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ভোটপ্রাপ্তির হিসাবে তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে বিজেপি। স্বভাবতই দলের এই শোচনীয় ফলাফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজভবন নির্ভরতা বন্ধ করে বাংলায় দলকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে কী করণীয় সেই প্রশ্নের জবাব চান অমিত শাহ-জে পি নাড্ডারা (J P Nadda)।
তাই সুকান্ত-শুভেন্দুদের আগামী শনিবার থেকে শুরু হওয়া হায়দরাবাদে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) দলের শোচনীয় অবস্থা নিয়ে কার্যত কৈফিয়ত তলব করতে চলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শুধু তাই নয়, ব্যাখ্যা দিতে হবে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো গেরুয়া ফানুসটা ভোটের ফল বেরোলেই কেন চুপসে যাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: অ্যাঞ্জেলিনা জোলির কায়দায় কৃত্রিম স্তন বাংলার মেয়ের, এসএসকেএমে নজিরবিহীন অস্ত্রোপচার]
দার্জিলিংয়ের জিটিএ থেকে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট। দার্জিলিং-কার্শিয়াং, শিলিগুড়ি, নকশালবাড়ি ও মাটিগাড়ার মতো একদা পদ্মপ্রাধানের জোনে কার্যত ধূলিসাৎ পদ্ম। আবার দক্ষিণবঙ্গে ছ’টি পুরসভার ছ’টি ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানও ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি (BJP)। দমদম, দক্ষিণ দমদম, পানিহাটি, ভাটপাড়া ও চন্দননগর ও ঝালদার ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হয়। চন্দননগরে ফের জয়ী হয়েছে সিপিএম। ঝালদা দখলে রেখেছে কংগ্রেস। আর বাকি চারটি পুর এলাকার চার ওয়ার্ডই দখল করেছেন তৃণমূল (TMC)।
বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখা বিজেপি সব ওয়ার্ডেই গো-হারা। অনেক ওয়ার্ডে পদ্মপ্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ভোটে রিগিংয়ের দাবি কিন্তু একবারও করেনি বিজেপি। কেন্দ্রীয় গেরুয়া নেতৃত্ব জানতে চায়, সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশে নির্বাচন হওয়ার পরও এই ছ’টি ওয়ার্ডে বিজেপি তৃতীয় স্থানে চলে গেল কেন? বিরোধী পরিসরে বিজেপি কি অবলুপ্তির দিকে এগোচ্ছে রাজ্যে? বাংলায় কি তা হলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বামেরা? এই প্রশ্নে তোলপাড় গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলও।