স্টাফ রিপোর্টার: রাত পোহালেই বহুচর্চিত বিজেপি (BJP) যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান। যে অভিযান ঘিরে অশান্তির আশঙ্কাও ঘনিয়েছে গত ক’দিন ধরে। শান্তি বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ পুলিশও। কিন্তু সেই আশঙ্কায় জল ঢেলে যুব বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিন বৃহস্পতিবার ও পরদিন শুক্রবার নবান্নের দরজা বন্ধ রাখার ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। এই দু’দিন সকল সরকারি কর্মী ও আধিকারিকদের নবান্নে আসতে বারণ করা হয়েছে।
নবান্ন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের পরও যে তাদের অভিযানের তীব্রতা বা অভিমুখ কম হচ্ছে না, তা বুধবার রাতে জোর গলায় ঘোষণা করেছে যুব বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ বলেছেন, “আমাদের অভিযান হচ্ছে, হবে। এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই।” তিনি জানিয়েছেন, অভিযানে নেতৃত্ব দিতে সন্ধ্যায় উড়ান ধরে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন যুব বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য্য। সূত্রের খবর, আচমকা বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে অভিযোনের কৌশল ঠিক করতে সন্ধে থেকেই গভীররাত পর্যন্ত বৈঠক করেছেন যুব মোর্চার নেতারা। পরামর্শ নেওয়া হয়েছে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতাদের কাছ থেকেও।
[আরও পড়ুন: মাস্কের জন্য রোজ ৫ হাজার টাকা! অতিরিক্ত বিল করে ফের কাঠগড়ায় বেসরকারি হাসপাতাল]
মিছিলে যোগ দিতে রাতে বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা মঙ্গলবার থেকেই কলকাতায় পৌঁছে যেতে শুরু করেছে। তাদের থাকার ও খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা দলের তরফে করা হয়েছে। ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, বুধবার সকাল ১১ টায় চার জায়গা থেকে মিছিল শুরু হবে নবান্নের (Nabanna) দিকে। বিজেপির রাজ্য দপ্তর থেকে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে একটি মিছিল হবে। কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়ের নেতৃত্বে একটি মিছিল হবে হেস্টিংসে ফ্লাই ওভারের নিচ থেকে। যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য নেতৃত্ব দেবেন হাওড়া ময়দান থেকে রওনা দেওয়া মিছিলের। আর রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু-সহ অন্যরা সাঁতরাগাছি থেকে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন। পাশাপাশি পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পকেটে পতাকা নিয়ে বিভিন্ন গলিঘুঁজি থেকে একাধিক ছোট ছোট মিছিল গরিলা কায়দায় নবান্নের গেটের কাছে যাওয়ার পরিকল্পনাও শোনা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার অশান্তির আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়েও দিচ্ছেন না কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একাংশ।
প্রাথমিকভাবে শিল্প, কর্মসংস্থান, আইনশৃঙ্খলা-সহ একাধিক দাবিতে এই অভিযান ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এর সঙ্গে টিটাগড়ের বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লা খুনের ঘটনার ইস্যুও যোগ হওয়ায় অভিযান অন্য মাত্রা পেয়েছে। বস্তুত মনীশ শুক্লার খুনের ঘটনা এই অভি়যানকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছে বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের।
[আরও পড়ুন: বিজেপির অভিযানের দিনই স্যানিটাইজেশনের জন্য বন্ধ নবান্ন, মমতাকে তোপ ক্ষুব্ধ দিলীপের]
বুধবার পুলিশি অনুমতির জন্য বিজেপির প্রতিনিধি দল চিঠি দেয় লালবাজারে। কিন্তু মিছিলের অনুমতি মেলেনি। অনুমতি না দেওয়ার যুক্তি হিসেবে শাহিনবাগ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় ও অতিমারি পরিস্থিতিতে মিছিল ও জমায়েত করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বিধি নিষেধের কারণ উল্লেখ করেছে কলকাতা পুলিশ কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে রাজ্য যুব বিজেপির সভাপতি সৌমিত্র খাঁর বক্তব্য, “ওরা কোনদিনই অনুমতি দেয় না। আমাদের মিছিল কাল এগিয়ে যাবে নবান্নের দিকে। আমাদের আটকালে আমরা পিছু হঠবো না।” পরে রাজ্য প্রশাসন বিজেপির চিঠির উত্তর হিসেবে একটা চিঠি প্রকাশ করেও অবশ্য তা উইথড্র করে নেয় তারিখ গন্ডগোল থাকায়।