রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রাজ্যে একের পর এক ভোটে ভরাডুবি। দলীয় নেতা, নেত্রীদের ‘বিদ্রোহ’। সবমিলিয়ে বঙ্গ বিজেপির (BJP) অন্দরে চাপানউতোর যে বেশ কয়েকমাস ধরে জারি রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। মুখে কিছু না বললেও, দলীয় নেতানেত্রীরা যে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছেন, সে বিষয়েও কোনও সন্দেহ নেই বিরোধীদের। আর এই দাবিতেই যেন সিলমোহর দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দল যে বিপাকে পড়েছে, তা কার্যত স্বীকার করে নিলেন তিনি।
মঙ্গলবার জল্পনার অবসান ঘটে। নজরুল মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উপস্থিতিতে ফুলবদল করেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তবে তিনি যে দলবদল করতে পারেন, সে জল্পনা অবশ্য আগে থেকেই মাথাচাড়া দিয়েছিল। কারণ, একসময়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র বারবার দলের বিরুদ্ধেই ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছিলেন। রাজ্য বিজেপির অবস্থা শোচনীয় বলেও দাবি করেছিলেন। শেষমেশ তাঁকে সাময়িক সাসপেন্ডও করে দলের হাইকম্যান্ড। আর তারই মাঝে বিজেপি ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখালেন জয়প্রকাশ মজুমদার। হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেওয়ার পরই পেলেন বড়সড় দায়িত্ব। বর্তমানে তৃণমূলের (TMC) সহ সভাপতি তিনি।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি বন্ধ করল আমেরিকা, বড় ঘোষণা বাইডেনের]
জয়প্রকাশ মজুমদারের দলবদলের পর চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বুধবার সকালে দিল্লি উড়ে যান দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তার আগে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে কার্যত বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি। জয়প্রকাশ মজুমদারের দলবদল নিয়ে কটাক্ষ করতে গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি বলেন, “পার্টি এখন গাড্ডায় পড়ে গিয়েছে। সেজন্য যদি কেউ দল ছেড়ে চলে যায় তবে কিছু বলার নেই। আমরা পার্টিকে দাঁড় করিয়েছি। সব পার্টি, ব্যক্তির জীবনে এরকম আসে। আমরা লড়াই করছি। আবার পার্টিকে দাঁড় করাব।” সদ্য দলত্যাগী নেতাকে কটাক্ষের সুরে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ফুটবল ক্লাব বদলের মতো রাজনীতিতেও দলবদল চলছে। যে যেভাবে দল করে। কিছু লোক আসবে যাবে। এ নিয়ে কিছু বলার নেই। দলে কিছু পেশাদার লোক থাকে। তাঁরা যেখানে যায় সেখানে তেমন কথা বলে।”
গত সোমবার বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee) বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবিরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেও দেখা গিয়েছিল জয়প্রকাশ মজুমদারকে।
তা নিয়েও এদিন মুখ খোলেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “কোনও নেতা বা নেত্রী বা দল নাকি ব্যক্তিকে বিশ্বাস করবেন, তা তিনি নিজেই ঠিক করুন। কোনও বিষয়ে দ্বিমত হতেই পারে। সুবিচারের জায়গা অবশ্যই দলে আছে। অপেক্ষা করতে হবে।” রাজনৈতিক মহলের মতে, বঙ্গ বিজেপির ডামাডোল যে ক্রমশ বিশাল আকার ধারণ করছে, সে বিষয়ে আর কোনও সন্দেহ নেই। এদিকে বিরোধী শিবিরের অস্বস্তিই এখন শাসকদলকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছে।
দেখুন ভিডিও: