শেখর চন্দ, আসানসোল: কোনওদিনই সম্পর্ক সুমধুর ছিল না। বারবার একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। তা সত্ত্বেও শেষের কিছুদিন একই রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) ও জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari)। ফলে দু’জনেরই সুর খানিকটা নরম হয়েছিল। প্রাক্তন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় দল ছাড়তেই ফের তাঁকে আক্রমণ শানালেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র।
১৮ সেপ্টেম্বর আচমকাই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। তারপরই জানিয়েছিলেন সাংসদ পদ থেকে ইস্তফার কথা। সেই মতো একাধিকবার লোকসভার স্পিকারের সময় চাইলেও তা না মেলায় খানিকটা জটিলতা তৈরি হয়েছিল। অবশেষে ১৯ অক্টোবর ইস্তফা দেন তিনি। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাবুল। ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন দলে গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না, তা সত্ত্বেও কাজ করে গিয়েছেন। তবে কোনওদিন কোনও পরিস্থিতিতেই অন্যায় মেনে নিতে রাজি নন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “ছোটবেলায় শুনেছিলাম, যদি নিজের মন ও হৃদয় বলে যে কেউ অন্যায়ভাবে তোমাকে দশ টাকা জরিমানা দিয়েছে তাহলে জরিমানাটা না দিয়ে আদালতে লড়াই করো, দরকার হলে একশো টাকা খরচ করে সেই জরিমানা revoke করাও। অন্যায় ভাবে করা জরিমানা, যে যাই বলুক, কখনই তা মেনে নেবে না। তাই আড়াই বছর বাকি থাকা সত্ত্বেও বিজেপির হয়ে জেতা সাংসদ পদ ছেড়ে দিতে একটুও দ্বিধা করিনি।”
[আরও পড়ুন: মদ্যপানে বাধা পেয়ে রাগের বশে ঘুমন্ত স্বামীর পুরুষাঙ্গ কাটল স্ত্রী!]
আর এই পোস্টকে হাতিয়ার করেই এবার বাবুলকে আক্রমণ করেছেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বাবুল সুপ্রিয়র পোস্টটি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়াটা যদি জরিমানা হয় তাহলে বিনা পরিশ্রমে রামদেব বাবার সুপারিশে এবং মোদিজির জনপ্রিয়তায় সাংসদ হওয়াটা লটারিতে প্রাইজ পাওয়ার মত নয় কি?” অর্থাৎ জিতেন্দ্র তিওয়ারির দাবি, স্রেফ রামদেবের সুপারিশ ও মোদির জনপ্রিয়তারও কারণেই সাংসদ পদ পেয়েছিলেন বাবুল। এই পোস্ট নিয়ে তীব্র বিতর্কও তৈরি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই জিতেন্দ্রর মন্তব্যের বিরোধীতা করেছেন। কেউ আবার সমর্থনও জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গতবছরের শেষদিক থেকেই জিতেন্দ্র তিওয়ারির গলায় শোনা যাচ্ছিল তৃণমূল বিরোধী সুর। প্রথমে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও পরে সংবাদমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে মিটে ছিল মান-অভিমান। তবে শেষমেশ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। এদিকে বাবুল সুপ্রিয় বর্তমানে তৃণমূলে। ফলে তাঁদের অন্তর্কলহ এখনও অব্যাহত।