রাজা দাস, বালুরঘাট: কুশমন্ডির বাঁশপাড়ার নিহত বিজেপি বুথ সভাপতির পরিবারের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দেখা করলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা উত্তরবঙ্গের অবজারভার সায়ন্তন বসু (Sayantan Basu)। নির্জন এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া স্বাধীন রায় নামে স্থানীয় সক্রিয় বিজেপি নেতাকে রাজনৈতিক কারণে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা খুন করেছে বলে অভিযোগ। সময় আসলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিজেপি নেতা।
সায়ন্তন বসু বলেন, “দলের বুথ সভাপতির গলায় ফাঁস দেওয়া দেহ উদ্ধার হয়। তৃণমূলী (TMC) কায়দায় অর্থাৎ গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করা হয়েছে। এর আগে মারধরের পাশাপাশি খুনের হুমকিও দেওয়া হয় তাঁকে। আর এবার খুন। লোক দেখানোর জন্য দু’জনকে ধরে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তার করলে সব পরিষ্কার হবে। এর পিছনে বড় মাথা রয়েছে। বেআইনিভাবে রাতের অন্ধকারে পুলিশ ময়নাতদন্ত করল। আবার জোর করে মৃতদেহ দাহ করিয়েছে পুলিশ। যাতে আমরা আসতে না পারি। পুলিশ প্রশাসন কিছু করবে না। সিবিআই তদন্ত হবে।” সময় আসলে ব্যবস্থা নেব বলেও হুঁশিয়ারি সায়ন্তনের। বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা দলের পক্ষ থেকে পাশে দাঁড়াচ্ছি ওই পরিবারের। স্বাধীনের নাবালক ছেলেটি মেধাবী। তার পড়াশোনা ও পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ‘সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছি’, তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা মিহির গোস্বামীর]
দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমন্ডি বিধানসভা তথা গঙ্গারামপুর ব্লকের হোসেনপুর বাঁশপাড়ার বাসিন্দা মৃত স্বাধীন রায়। পেশায় সবজি বিক্রেতা স্বাধীন বাঁশপাড়া ১৬৬ নম্বর বুথের বিজেপি (BJP) বুথ সভাপতি ছিলেন। তাঁর স্ত্রীও বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। গত বুধবার সকালে সবজি বিক্রি করতে বেরিয়েছিলেন তিনি। বাড়ির অদূরে শালবাগান এলাকার একটি নির্জন জায়গায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সঙ্গে থাকা মোটর বাইকটি মেলে মৃতদেহর থেকে অনেকটা দূরে। গলায় মোটা দাগ ও মুখে ধুলোবালি দেখে পরিবার ও এলাকার একাংশের অভিযোগ, স্বাধীনকে খুন করা হয়েছে। এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে প্রথম থেকে দাবি করে আসছিল বিজেপি ও পরিবারের লোকেরা। ঘটনার দিনই এলাকায় গিয়ে মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী-সহ অনেকেই।
অন্যদিকে ওইদিন ঘটনার পরেই গঙ্গারামপুর (Gangarampur) থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। রাতেই ময়নাতদন্ত করা হয়। পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে মৃত স্বাধীনের বাড়িতে পৌঁছে যান বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা উত্তরবঙ্গের অবজারভার সায়ন্তন বসু। সঙ্গে ছিলেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, বিজেপি জেলা সভাপতি বিনয় বর্মন, জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার-সহ আরও অনেকে। মৃতের স্ত্রী-সহ আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। সায়ন্তন বসুর উপস্থিতিতে থানায় যান নিহতের পরিজনেরা। খুনের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। এই ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানান সায়ন্তন বসু ও দলীয় সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।