সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভিক্টোরিয়ায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়ে আরও উত্তপ্ত কেন্দ্র-রাজ্য তরজা। মেজাজ হারিয়ে কোনও বক্তব্য না রেখেই প্রতিবাদস্বরূপ মঞ্চ থেকে নেমে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকেই সমালোচনা, পালটা সমালোচনায় সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সেই আগুনেই এবার ঘি ঢাললেন বিজেপি নেতা তজিন্দার সিং বাগ্গা। জানালেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানায় এবার এক লক্ষ ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা পোস্টকার্ড পাঠানো হবে।
শনিবার নেতাজির ১২৫ তম জন্মজয়ন্তীতে কলকাতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। নেতাজি ভবন থেকে ন্যাশনাল লাইব্রেরি হয়ে ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। আমন্ত্রিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য পেশ করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আর ঠিক তখনই দর্শকাসন থেকে ওঠে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। মেজাজ হারিয়ে মঞ্চে উঠেই ঘটনার প্রতিবাদ করেন মমতা। বলে দেন, “এটা সরকারি অনুষ্ঠান। কোনও রাজনৈতিক সভা নয়। আমন্ত্রণ জানিয়ে বেইজ্জত করা উচিত নয়। তাই আমি কোনও বক্তব্য রাখব না। তবে কলকাতায় এই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
[আরও পড়ুন: ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলা নেবো, তৈরি থাকো’, বিরোধী বিজেপিকে কড়া হুঁশিয়ারি অভিষেকের]
‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিতে মুখ্যমন্ত্রীর এমন প্রতিক্রিয়াতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক আঁকচা-আঁকচি। নেতাজির জন্মদিনে এহেন ধ্বনি দিয়ে অনুষ্ঠানের অপমান করা হয়েছে বলেই সুর চড়ান রাজ্যের শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা। বিজেপির পালটা দাবি, মানুষ যেমন খুশি স্লোগান তুলতে পারেন। এতে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতার (Mamata Banerjee) এমন প্রতিক্রিয়া কাম্য নয়। হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ আবার কটাক্ষ করে বলেন, “ষাঁড় যেমন লাল রং দেখলে রেগে যায়, জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনলেও মুখ্যমন্ত্রীর একই প্রতিক্রিয়া হয়।” এই তরজার মধ্যেই বিতর্ক আরও উসকে দিলেন বিজেপি নেতা তজিন্দর সিং বাগ্গা। টুইটারে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “দিদি, আপনি জয় শ্রীরাম শুনলেই কেন মেজাজ হারান? আপনার কাছে জয় শ্রীরাম লেখা এক লক্ষ পোস্ট কার্ড পাঠানো হবে।” এর পাশাপাশি আবার মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার স্পিকার রামেশ্বর শর্মা কটাক্ষ করেই মমতাকে ‘রামায়ণ’ মহাকাব্য উপহার দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও এই ধ্বনি শুনে মেজাজ হারাতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। আর ২৩ জানুয়ারি ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় এনিয়ে রাজনৈতিক মতোবিরোধ চরমে।