shono
Advertisement

জোট শরিককে কেন বাঘমুণ্ডির আসন ছাড়ল বিজেপি? তুমুল ক্ষোভ দলের অন্দরে

উঠে আসছে রাজনীতির অন্য সমীাকরণ!
Posted: 07:19 PM Mar 07, 2021Updated: 08:18 AM Mar 08, 2021

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুরুলিয়া গেরুয়া শিবিরের ‘শক্তঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত। পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে লোকসভা ভোট, সবেতেই তাৎপর্যপূর্ণ ফল করেছে বিজেপি। তাই বিধানসভা নির্বাচনে বাঘমুণ্ডি আসনটি জোট শরিককে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না পদ্ম শিবিরের নেতা-কর্মীরা। ইতিমধ্যে সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে বিভিন্নভাবে। কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হচ্ছে তো কেউ দল ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন। পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি আসনের নিচুতলার কর্মীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জোট শরিক আজসু (অল ঝাড়খন্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন)-র প্রার্থীকে তাঁরা মানবেন না।

Advertisement

শনিবার প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বাঘমুন্ডি বিধানসভার বিজেপির বিভিন্ন হোয়াটসগ্রুপে ভেসে উঠছে একের পর এক তীর্যক মন্তব্য। এই বিধানসভার ঝালদা এক নম্বর ব্লকের জারগো মোড়ে বিজেপির পতাকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান নেতা–কর্মীরা। এমনকী, বিধানসভা নেতৃত্ব দফায় দফায় বৈঠকও করে। তবে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “বাঘমুন্ডি নিয়ে সমস্যার কথা আমার জানা নেই। দলীয় স্তরে আমি খোঁজ নিচ্ছি।”

[আরও পড়ুন : তৃণমূলেই থাকছেন আরাবুল? কলকাতা থেকে ফিরেই মতবদলের ইঙ্গিত দাপুটে নেতার]

গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে বাঘমুণ্ডি আসনে ৫২ হাজার লিড ছিল বিজেপির। যা এই জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ফলে এবার কংগ্রেস ‘গড়’ দখল করা অসম্ভব ছিল না বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলে। তবে কেন এই আসন শরিক দলকে ছেড়ে দিল বিজেপি? রাজ্য নেতৃত্ব সূত্রে খবর, রাজ্যসভায় আজসু বিজেপিকে সমর্থন করায় তাদের দাবি মতো বাঘমুন্ডি বিধানসভা আসন ছাড়ল বিজেপি। আজসু–র সুপ্রিমো তথা ঝাড়খন্ডের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহাতোর বাড়ি বাঘমুন্ডি লাগোয়া ঝাড়খন্ডের রাঁচি জেলার সিলি থানার লাগাম গ্রামে। ফলে এই বিধানসভা এলাকায় তাদের প্রভাব রয়েছে। সেইসঙ্গে আরও একটি কারণও দানা বাঁধছে। সুদেশ মাহাতোর সঙ্গে এই বাঘমুন্ডি বিধানসভার বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই নিজের জয় নিশ্চিত করতে এটা কংগ্রেস প্রার্থীর কোনও রাজনৈতিক কৌশল নয় তো? শনিবার রাত থেকে জেলার রাজনৈতিক মহলে এই গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে।

এদিকে সোশ্যাল মিডিয়া ভরে গিয়েছে নানা তীর্যক ও ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যে। আজসুর প্রতীক যেহেতু পাকা কলা, তাই সেই প্রতীক নিয়েও নানা ভাবে আক্রমণ করছে গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীরা। “জয় শ্রীরাম–পচাকলা/ ভোট দিতে হল জ্বালা।” সেইসঙ্গে “বিজেপির পচাকলা/ ভোট দিতে গায়ে জ্বালা।” আবার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে গেরুয়া নেতা–কর্মীদের তীর্যক মন্তব্য “হরে কৃষ্ণ হরে হরে/ পচা কলা ঘরে ঘরে।” নিজেদেরকেই সমালোচনায় বিদ্ধ করে তাদের মন্তব্য “হনুমানদের জন্য কলাই যথেষ্ট/ আয় বিজেপির হনুগুলো কলা খাবি।” সেই সঙ্গে দলের নেতাদের প্রতি ওই বিধানসভার কর্মীদের তীব্র আক্রমণ, “কোন হনু নেতা এই সিলেকশন করেছে জুতার মালা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।” সেই সঙ্গে প্রচারে আসার সময় বড় নেতাগুলোর গলায় জুতোর মালা দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

[আরও পড়ুন: ক্লাসের বান্ধবী রাজনীতির ময়দানে প্রতিপক্ষ, ঝাড়গ্রামে দুই সহপাঠীর ভোটযুদ্ধ]

সবমিলিয়ে ক্ষোভে জ্বলছে বাঘমুন্ডির গেরুয়া শিবির। এই বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা তথা পুরুলিয়ার সাংসদ, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় মাহাতো। তারপরেও এই বিধানসভা দলের প্রতীক পাবেন না, এটা ভাবতেই পারছেন না দলের সাধারণ নেতা কর্মীরা। তাই কেউ বলছেন ইস্তফা দেবেন। কারও হুমকি আইটি সেলের কাজ ছেড়ে দেবেন। আবার কেউ বলছেন, “খেলা হল। বিজেপি খেলতেই চান্স পেল না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার