রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: এবার দলের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন বঙ্গ বিজেপির কবিয়াল বিধায়ক অসীম সরকার (Ashim Sarkar)। হরিণঘাটার বিধায়ক ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দেওয়ায় অস্বস্তিতে বিজেপিও। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিজেপির বিধায়ক। এর ফলে গেরুয়া শিবিরের আভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ক্ষোভ-বিক্ষোভ আরও বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে।
ফেসবুকে পোস্ট করে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় দলের মণ্ডলস্তরে রদবদল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করেছেন অসীম সরকার। তিনি লিখেছেন, ‘‘মাননীয় সুব্রত ঠাকুর (Subrata Thakur) মহাশয় আমাকে বললেন মন্ত্রী মহাশয় (কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর) বাড়িতে এলে ২৭ তারিখে আমাদের পাঁচজন বিধায়ককে নিয়ে একসঙ্গে ঠাকুরবাড়িতে বসে বৈঠকের পর সর্বসন্মতিক্রমে মণ্ডল সভাপতি নির্ধারণ করা হবে। হঠাৎ করে কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মণ্ডল সভাপতিদের লিস্ট বেরিয়ে গেল? বাপারটা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন দেখছি চারদিক থেকে প্রকৃত লড়াকু বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ভীষণ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।’’
[আরও পড়ুন: কাবেরী নিয়ে এবার ‘সুপ্রিম’ লড়াই! জল না ছাড়ার সিদ্ধান্তে অনড় কর্নাটক]
মতুয়া বিধায়ক পোস্টে আরও লিখেছেন,‘‘আমি হরিণঘাটার (Haringhata) জনগণের কাছে বলছি, দেখুন আমি একজন কবি মানুষ। উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব সুরক্ষার জন্য এই রাজনীতিতে এসে আপনাদের আশীর্বাদে বিধায়কও হয়েছি। এই সব দেখে আমার আর ভাল লাগছে না। জানি না এর ফলাফল ভবিষ্যতে কতদূর গড়াবে।’’ আগামী দিনে বিজেপির সঙ্গে পথ চলা নিয়ে সংশয়ের ইঙ্গিতও রয়েছে তাঁর এই ফেসবুক পোস্টে। প্রশ্ন, বিজেপির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে আগামী দিনে কি দলের সঙ্গে সংস্পর্শ ত্যাগ করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন হরিনঘাটার বিধায়ক? মণ্ডল সভাপতিদের নাম ঠিক করা নিয়ে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছিল সেটাও তিনি উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, ‘‘দেবদাস দা আমাকে কথা দিয়ে বলেছিলেন জেলা কমিটি ও মণ্ডল কমিটি অবশ্যই লোকাল বিধায়কদের মতামত নিয়েই করবেন। সেই দেবদাসদা এভাবে কথা নষ্ট করবেন আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারছি না।’’
[আরও পড়ুন: ডাউনলোড হয়নি নির্দেশের কপি, মুক্তির ৩ বছর পরেও গুজরাটের জেলে বন্দি ব্যক্তি]
তিনি শেষদিকে লিখেছেন, ‘‘আমি মাননীয় সুব্রত ঠাকুর মহাশয়কে ফোন করে বিষয়টা জানতে চাইলাম। বড় ঠাকুর মহাশয় বললেন, আর বসাবসি কিসের? যা যা হওয়ার তা হয়েই গিয়েছে। আমাদের বিধায়কদের তো ওরা এক পয়সারও মূল্য দিল না।’’ সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে তাঁর ক্ষোভের কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও দলের রাজ্য নেতৃত্বকেও জানিয়েছেন বিধায়ক। বনগাঁ লোকসভার পাঁচজন বিধায়কই দলের এই সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে খুশি নয় বলে দাবি অসীম সরকারের। বনগাঁ সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে মতুয়া বিধায়কদের দাবি মানা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ উঠেছে।