shono
Advertisement

আত্মপ্রচারেই ব্যস্ত নেতারা! ভোটের বাজারেও ধুঁকছে পুরুলিয়ায় তৃণমূলের সোশ্যাল সাইট

সোশ্যাল সাইট প্ল্যাটফর্ম যে কত বড় ফারাক করে দিতে পারে তা ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বুঝিয়ে দিয়েছিল বিজেপি।
Posted: 11:06 PM Mar 26, 2024Updated: 11:06 PM Mar 26, 2024

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: এ যেন ঠেকেও না শেখা! ভরা ভোটের বাজারেও ধুঁকছে পুরুলিয়া তৃণমূলের সোশ্যাল সাইট। এই কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোকে জেতাতে সোশ্যাল সাইটে এখনও ঝড় তুলতে পারেনি শাসক দল। অথচ জেলা সভাপতি, মন্ত্রী, সভাধিপতি থেকে বিধায়করা এমনকি জেলা থেকে অঞ্চল স্তরের নেতা-কর্মীরাও আত্মপ্রচারে ব্যস্ত। কিন্ত দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে সম্মিলিত প্রয়াস চোখে না পড়ায় প্রতিদিন বিজেপির কাছে এই কেন্দ্রে
কার্যত গোল খাচ্ছে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সামাজিক মাধ্যমে এমন ছবি দেখে উদ্বিগ্ন হওয়ার পরেও নিষ্ক্রিয়তা কাটছে না পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের।

Advertisement

তৃণমূলের পদাধিকারী বা প্রশাসনের চেয়ারে বসে শাসক দলের জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কার্যত মুখে কলুপ এঁটে রয়েছেন। আর শাসকের এমন নিষ্ক্রিয়তাতেই এই প্ল্যাটফর্মে বিজেপির থেকে পিছিয়ে যাওয়ার পার্থক্যটা ক্রমেই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। যা ভোটের ফলাফলে ওলটপালট হয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতির পরেও তৃণমূলের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে যুক্ত এজেন্সিও কার্যত হাত গুটিয়ে বসে আছে বলে অভিযোগ। তবে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন,”এই প্ল্যাটফর্মে আমরা বরাবরই পিছিয়ে আছি এটা ঠিক । তবে এই মাধ্যমে ভোটের প্রচারকে তুঙ্গে তুলতে একটি বৈঠক হয়েছে। এবার নিশ্চিতভাবে ছবিটা বদলাবে।”

[আরও পড়ুন: আবগারি দুর্নীতি মামলায় কে কবিতাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠাল আদালত]

পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের তরফে এমন সুসংহত পরিকল্পনার কথা অতীতে বারবার শোনানো হলেও বাস্তবের ছবির সঙ্গে কোনও মিল নেই। সাম্প্রতিককালে কয়েক বছর আগে যখন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন শান্তিরাম মাহাতো। সেই সময় থেকে শাসক দলের এই সোশ্যাল সাইট হোঁচট খাচ্ছে। একুশের ভোটের আগে আদিবাসী নেতা গুরুপদ টুডু জেলা সভাপতির চেয়ারে বসলেও তাঁর সময়ও সোশ্যাল সাইট এই জেলায় ভোটারদের কাছে যেতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারেনি। একই ছবি সৌমেন বেলথরিয়ার সভাপতি থাকার সময়েও। তবে পার্থক্য শুধু একটাই। এখন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের নেতা থেকে কর্মীরা সর্বোপরি জনপ্রতিনিধিরা নিজের প্রচারে বেশি ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এবং তা সোশ্যাল সাইটে নয়। বিভিন্ন হোয়াটস্যাপ গ্রুপে। যেমন বিভিন্ন নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপে ফ্যান ক্লাব গ্রুপে। যেখানে শাসক দলের নেতা-কর্মী ছাড়া আর কেউ নেই। ওই সব গ্ৰুপে সংশ্লিষ্ট নেতার নামেই ছবি দিয়ে প্রচারের ঢক্কানিনাদ চলছে। অথচ দলীয় প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর সমর্থনে সম্মিলিত প্রচার নেই এই প্ল্যাটফর্মে।

এই বৃহত্তর সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে মানিয়ে না নেওয়ার জন্যই জেলা তৃণমূল সভাপতির কুরসি হারাতে হয়েছিল শান্তিরাম মাহাতোকে। আর এখন ভোটপ্রার্থী হয়ে তিনি নিজেও তাঁর সোশ্যাল সাইট টিমকে চাঙ্গা করে উঠতে পারেননি। যদিও তাঁর কথায়, “এই ছবিটা কয়েকদিনের মধ্যেই দ্রুত বদলে যাবে।”

তবে একটা উদাহরণ-এ স্পষ্ট। পুরুলিয়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর ফেসবুক ফলোয়ার্স যেখানে ৫০ হাজার। সেখানে শান্তিরাম মাহাতোর ১৩ হাজার। তাঁর ফেসবুক পেজে জনসংযোগের কর্মসূচি ও ভোটের প্রচার লাইভে বা সাধারণভাবে তুলে ধরা হলেও দলীয় কর্মীদের সেভাবে কমেন্ট থাকে না। থাকে না লাইক। আর শেয়ার তো দূর অস্ত। একটি উদাহরণ দিলে আরও স্পষ্ট হবে ছবিটা। সোমবার দোলের রং খেলার দিনের শোভাযাত্রায় বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময়ের যেখানে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ৬২৯ শেয়ারস, ৬৩ কমেন্ট, ৪.৯কে ভিউজ। সেখানে শান্তিরামের রং খেলার ভিডিওতে ১২ কমেন্ট, ১৩ শেয়ারস, ১.১ কে প্লেইজ। এই ছবিটা সামনে আসার পরেও জেলা তৃণমূলের টনক নড়েনি।

[আরও পড়ুন: জলের পর এবার স্বাস্থ্য দপ্তরকে নির্দেশ কেজরির, জেল থেকেই চলছে দিল্লির সরকার!]

পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের একটি সূত্র থেকেই জানা গিয়েছে, জেলার নেতাদের মধ্যে এমনই গোষ্ঠী বাজি যে কোন নেতা বা কোন জনপ্রতিনিধি তাঁর দলের নেতা বা জনপ্রতিনিধির সোশ্যাল ওয়ালে কোনও কর্মসূচি শেয়ার করা তো দূর। ভিউ করার পরেও লাইক পর্যন্ত করেন না বলে অভিযোগ। পাছে সংখ্যাটা বেড়ে যায়! অথচ এই সোশ্যাল সাইট প্ল্যাটফর্ম যে কত বড় ফারাক করে দিতে পারে তা ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বুঝিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রাঙ্গা বলেন,”সোশ্যাল ওয়াল শুধু কেন পুরুলিয়ার ওয়াল থেকে মুছে গিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটের ফলাফলে আবারও প্রমাণ হয়ে যাবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement