সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুদিন ধরেই নয়া কৃষি বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হচ্ছে নয়াদিল্লিতে। এই কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে আগামী ৮ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত শহিদ মিনারে অবস্থিত গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার কথা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। ক্ষেতমজুর সংগঠনের নেতা বেচারাম মান্নার নেতৃত্বে তা অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানা গিয়েছে। এমনকী শনিবার তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে বসে অকালি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর আগামী ৮ তারিখের ভারত বনধকে নৈতিক সমর্থন দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের ব্লকে ব্লকে কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে বিশেষ কর্মসূচির পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। রবিবার সেই সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। নোংরা রাজনীতি করে পশ্চিমবঙ্গে ঝামেলা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।
রবিবার চুঁচুড়া বিধানসভার অন্তর্গত ব্যান্ডেলের কেওটা এলাকায় মতুয়া সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন হুগলির সাংসদ ও রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদিকা লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে সেখানকার রাস্তা পরিষ্কার করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন হুগলি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায়ও। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কৃষি বিল নিয়ে বিরোধীরা অযথা উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন লকেট। সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের উপর ভর করে রাজ্যের ক্ষমতায় এলেও তৃণমূল কংগ্রেস গত ১০ বছরের কৃষকদের জন্য কিছুই করেননি বলে দাবি করেন। রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যে যে তিন দিনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে তাতে আদৌও কৃষকরা থাকবেন কি না?
[আরও পড়ুন: ‘গোর্খাদের সঙ্গে প্রতারণার ফল কী, বুঝিয়ে দেব দিলীপ ঘোষদের’, জনসভা থেকে হুমকি গুরুংয়ের ]
এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এত মানুষের আর্শীবাদ বিজেপির উপর রয়েছে দেখে ওরা ভয় পেয়েছে তাই মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা চলছে। তবে ওরা কোনও কিছু করতে পারবে না। কৃষকদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে আন্দোলন করে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু, ১০ বছরে তাঁদের জন্য কিছু করেনি তৃণমূল। সিঙ্গুরে ওরা বলেছিল, শিল্প নয় কৃষি চাই। আজ সিঙ্গুরের সেই সব জমিতে ঘাস আর কাশফুল দেখা যাচ্ছে। কৃষকদের চাষের বিষয়ে কোনও সাহায্য করেনি। আর আজ আবার বলছেন কৃষক আন্দোলন করবেন। বাংলার কোনও কৃষক ওনার সঙ্গে আছে? না পাঞ্জাব থেকে কৃষক নিয়ে আসবেন? আসলে বাংলার একটা কৃষকও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নেই। আমরা কৃষক সুরক্ষা যাত্রা করেছিলাম, তাতে ১০ লক্ষের বেশি কৃষকের পরিবার আমাদের সঙ্গে ছিলেন। এখনও দিল্লিতে যে আন্দোলন চলছে তাতে কি বাংলা থেকে কোনও কৃষক গিয়েছেন? না বাংলার সাধারণ কৃষকরা এই রাজ্যে রাজনৈতিক ব্যানার ছাড়া কোনও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন? অযথা তাঁদের ভুল বুঝিয়ে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হলেও কোনও লাভ হবে না। বাংলার কৃষকরা মোদিজির সঙ্গেই আছেন।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আজ বনগাঁয় জনসংযোগ যাত্রা করতে গিয়ে দুই-তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে বিজেপি বাংলায় সরকার গড়বে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। এক-দেড়মাসের মধ্যে CAA লাগু হবে বলেও দাবি করেন। পাশাপাশি কৃষক আন্দোলনের নামে দিল্লিতে একটি প্রদেশের কৃষকদের নিয়ে নোংরা রাজনীতির চেষ্টা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন। কেন্দ্রীয় সরকার ঘরে ঘরে পানীয়জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতে চাইলেও রাজ্য সরকার সেই ফাইলের উপরে শুয়ে আছে বলেন কটাক্ষ করেন।