সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোনার বাংলা গড়াই মূল লক্ষ্য। একুশে বঙ্গের বিধানসভার লড়াইয়ে নেমে বারবার একথা শোনা গিয়েছিল দিল্লির বিজেপির নেতৃত্বের গলায়। এবার এই ‘সোনার বাংলা’কে সামনে রেখেই নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করল বিজেপি (BJP)। নাম – ‘সোনার বাংলা সংকল্পপত্র ২০২১’। এতে উঠে এল মহিলাদের জন্য একাধিক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাত ধরে রবিবার সন্ধে ৬টা নাগাদ প্রকাশিত হল ইস্তাহার। তাঁর কথায়, ”নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিপত্রে আমরা বিশ্বাস করি না। এটা সংকল্প পত্র। ক্ষমতায় এলে সংকল্পগুলো পূরণ করার কাজ করব। ইস্তেহারের ভিত্তিতেই সরকার চলবে।”
ইস্তাহার প্রকাশ অনুষ্ঠানেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে বিঁধতে ছাড়লেন না অমিত শাহ। বর্তমান সরকারের ত্রুটিবিচ্যুতি চিহ্নিত করে তা মিটিয়ে ফেলার প্রতিশ্রুত দিলেন। মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে বাংলার মহিলাদেরই সুরক্ষা নেই, এই অভিযোগে ফের সরব হয়ে বলেন, ”বাংলায় দিনদিন নারী সুরক্ষার হাল খারাপ হয়েছে। তাই এই ইস্যুতে আমাদের বিশেষ নজর রয়েছে।” বিজেপি ইস্তেহারের কী কী প্রতিশ্রুতি রয়েছে, দেখে নিন একঝলকে –
- কেজি থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত রাজ্যের মহিলাদের শিক্ষা বিনামূল্যে মিলবে। এটি তৃণমূল সরকারের ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের পালটা বলে মনে করা হচ্ছে।
- ‘বালিকা আলো’ প্রকল্পে আদিবাসী এবং দলিত মেয়েদের পড়াশোনার জন্য এককালীন ২ লক্ষ টাকা।
- মহিলাদের জন্য কর্মক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ।
- বিধবাদের ৩ হাজার টাকা করে ভাতা ঘোষণা করলেন অমিত শাহ।
- সরকারি বাসে মহিলাদের বিনামূল্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হবে।
- কলকাতার বাইরে মেট্রো সম্প্রসারণ। শ্রীরামপুর-ধূলাগড়-কল্যাণী সংযোগকারী মেট্রো প্রকল্প।
- মৎস্যজীবীদের, ভূমিহীন প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দুর্ঘটনা বিমা। ৬ হাজার টাকা অনুদান।
- শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পাশাপাশি পরিবার পিছু ১০ হাজার অনুদান।
- অনুপ্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করা হবে, সীমান্তে নজরদারি, থানায় সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি।
- উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহলে মোট ৩ টি এইমস (AIIMS) তৈরি, কাদম্বিনী গাঙ্গুলি স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনা।
- ২০২৪ সালের মধ্যে নার্সিংয়ে আসন দ্বিগুণ হবে।
- আশা কর্মীদের ভাতা ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি।
- ২৪ ঘণ্টা মিলবে বিদ্যুৎ পরিষেবা, বছরে ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্য়ে।
- সরকারি কাজে লাল ফিতের ফাঁস আরও আলগা। সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেমে ১৫ দিনের মধ্যে সরকারি কাজের প্রক্রিয়া সম্পন্ন।
- তিলি, মাহিষ্যদের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি।
- পুরোহিতদের মাসে ৩ হাজার টাকা ভাতা। পুরোহিত কল্যাণ বোর্ড গঠন।
- পুরুলিয়া, মালদহ, বালুরঘাটে বিমানবন্দর তৈরি।
- নোবেলের আদলে ‘টেগোর পুরস্কার’ চালু, টালিগঞ্জে মহানায়ক উত্তম কুমার ফিল্ম সিটি তৈরি, অস্কারের স্তরে চালু ‘সত্যজিত রায় পুরস্কার’।
- ‘অন্নপূর্ণা আহার’ কেন্দ্র, যেখানে ৫ টাকায় তিনবেলা ভরপেট পুষ্টিকর খাবার মিলবে।
- রেশন গ্রহীতাদের জন্য ১ টাকায় চাল, ৩ টাকায় চিনি মিলবে।
- চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা হবে।
অমিত শাহর কথায়, ”রাজ্যের মোট বাজেটের ১৫ শতাংশ টাকা দিয়েই সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হবে।” এদিনই রাজ্যের কৃষকদের জন্য মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই পথে হেঁটেই বিজেপিও একই অঙ্কের টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, বিজেপির ইস্তাহারের প্রকল্পগুলি অধিকাংশই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের প্রকল্পের অনুকরণে তৈরি।