শংকর কুমার রায়, ইসলামপুর: কালিয়াগঞ্জে (Kaliaganj) গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যুতে রাজনীতির রং লাগল। বিজেপির দাবি, মৃত রাজবংশী যুবক নিরাপরাধ। তাঁর প্রতিবেশী বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করতে এসেছিল পুলিশ। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া পুলিশি অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তোলাতেই মৃত্যু হয়েছে দাবি, এমনই দাবি গেরুয়া শিবিরের। ইতিমধ্যে এ নিয়ে পুলিশ ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।, সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। যদিও এপ্রসঙ্গে পুলিশ তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। বিজেপিকে পালটা দিয়েছে রাজ্য়ের শাসকদল তৃণমূলও। তাঁদের দাবি, বিরোধী দলনেতার দাবি যদি মিথ্যা হয় তাহলে যেন তাঁকেই গ্রেপ্তার করা হয়। অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে। বাংলার পুলিশ সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে।
সূত্রের খবর, কালিয়াগঞ্জ থানায় তাণ্ডবের ঘটনায় রাধিকাপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য় বিষ্ণু বর্মনকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল পুলিশ। রাত তখন আড়াইটে। সেইসময় বাড়িতে ছিলেন না বিষ্ণুবাবু। তাঁর প্রতিবেশী তথা ভাইপো মৃত্যুঞ্জয় বর্মন পুলিশকে প্রশ্ন করতে শুরু করে। অভিযোগ, পুলিশের কাজে বাধা দেন। তখনই পুলিশ তাঁর উপর গুলি চালায় বলে দাবি বিজেপির। এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পুলিশের তরফে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।
[আরও পড়ুন: ‘আমরা হারারই যোগ্য, ম্যাচটা ওদের উপহার দিলাম’, কেকেআরের কাছে হেরে বিস্ফোরক কোহলি]
এদিকে রাজবংশী যুবকের মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এদিন বিরোধী দলনেতা রাজ্য় প্রশাসনকে বিঁধে দীর্ঘ টুইট করেন। যার নির্যাস, “অত্যাচার ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চরম পর্যায় পৌঁছে গিয়েছে। নাগরিক অস্থিরতা মারাত্মক আকার নিয়েছে। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্রাট নিরোর মতো আনন্দে উৎসবে মেতে রয়েছেন।” তাঁর আরও দাবি, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় কালিয়াগঞ্জের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ তা পালন করল। এই হত্যার সম্পূর্ণ দায় মুখ্যমন্ত্রীর।” একই দাবি করেছেন বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীও। তাঁর দাবি, পুলিশের গুলিতে নিরীহ রাজবংশী যুবকের মৃত্য়ু হয়েছে। বিজেপি নেতাকে ধরতে এসেছিল পুলিশ। তিনি বাড়িতে না থাকায় তাঁর বৃদ্ধ বাবাকে মারতে মারতে গাড়িতে তুলছিল পুলিশ। সেই সময় বিজেপি নেতার ভাইপো গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কথা জিজ্ঞেস করতেই গুলি চালায় পুলিশ। ইতিমধ্যে তিনি রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পৌঁছে গিয়েছেন। এদিকে মৃত যুবককে নিজেদের দলের কর্মী বলে দাবি করেছেন উত্তর দিনাজপুরের বিজেপি জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার।
[আরও পড়ুন: ‘অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙতে এলে আমি ধরনায় বসব’, হুঙ্কার দিলেন মমতা]
বিজেপিকে পালটা দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র শান্তনু সেন। তাঁর দাবি, “বাংলার পুলিশ যথেষ্ট সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে। এর আগেও বিজেপি এধরনের অভিযোগ করেছে কিন্তু তা মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এক্ষেত্রেও তেমন হলে অশান্তির দায় নেবে তো বিজেপি?” দলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদারের চ্যালেঞ্জ, অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হলে সঙ্গে সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেপ্তার করা হোক। কারণ উনি বারবার বাংলায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। দুষ্কীতিদের মতো আচরণ করছে।” তবে এনিয়ে এখনও নিশ্চুপ জেলা পুলিশ।