সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2021) আগে দলবদল নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। একগুচ্ছ তৃণমূল বিধায়ক যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। যা রীতিমতো চাপে রেখেছে ঘাসফুল শিবিরকে। আর শাসকদলের ঘরের ভাঙন স্বাভাবিকভাবেই গেরুয়া শিবিরকে অক্সিজেন জোগাচ্ছে। এই দলবদলের ইস্যুকেই হাতিয়ার করে আরও একবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
তিনি বলেন, “দিদিমণির চেহারাটা দেখেছেন, দেখলে কষ্ট হয়। নাওয়া খাওয়া উঠে গিয়েছে। চিন্তায় শুকিয়ে যাচ্ছেন। এবেলা ওবেলা এভাই, ওভাই দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।” নাম না করে ফের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও (Abhishek Banerjee) কটাক্ষ করেন। বলেন, “এত মানুষ ভোট দিয়ে দিদিকে জেতালো আর সেই দিদি কারুর কথা না ভেবে একজনেরই পিসি হয়ে গেলেন। কেন আমরা কি বানের জলে ভেসে এসেছি?”
রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) আরও বলেন, “এই সরকার কোনও কাজ করেনি। গরিব মানুষের জন্য মোদিজির পাঠানো সব টাকা লুটেছে। তৃণমূলের ছোট বড় নেতারা সব বড়লোক হয়েছে। বাড়ি, গাড়ি করেছে। কাটমানির টাকা কালীঘাটেও গিয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে কিছুই হজম করতে দেবো না। সরকার পালটালেই সব তদন্ত হবে। সব কটাকে জেলে পাঠাবো।” এরপরই বিজেপির রাজ্য সভাপতি তৃণমূলকে ‘ভাইরাস’ বলে উল্লেখ করে বলেন, “করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) ভ্যাকসিন এখনও আবিষ্কার হয়নি। কবে বিদায় নেবে কেউ জানে না। কিন্তু তৃণমূল ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়েছে। তার নাম ভারতীয় জনতা পার্টি। সেই ভ্যাকসিনেই মে মাসে বিদায় নেবে তৃণমূল নামক ভাইরাস।”
[আরও পড়ুন: কাঁথির সভায় অমিত শাহকে কটাক্ষ সৌগতর, গরহাজির অধিকারী পরিবারের সকলেই]
তিনি আরও বলেন, “ওই ভাইরাসই বিজেপির ১৩২জন কর্মীকে খুন করেছে। ওই ভাইরাসের কোপে অনেকেই মিথ্যে মামলায় ফেঁসেছে। এখনও ফাঁসছে। আমার নামেও চল্লিশটা মামলা রয়েছে। উস্তি থানাতেও মামলা করেছে। নাড্ডাজির কনভয়ে এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপর হামলা চলেছে তৃণমূল নেতাদের মদতে। কাউকে ছাড়া হবে না। সব নাম লিখে রাখা হয়েছে। ভোটের পর তারা ক্যানিং, জীবনতলা কিংবা উস্তি যেখানেই থাকুক সকলকে টেনে আনব। সুদে আসলে হিসেব নেব। ছাড়া হবে না যে সমস্ত পুলিশ (Police) অফিসার তৃণমূলের ওইসব কাজে মদত দিচ্ছে তাদেরকেও। লাল ডায়েরিতে সব নামই লিখে রাখা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের যে আর্থিক ক্ষতি তৃণমূল নেতারা করেছে তাদের জমি, বাড়ি বেচে সব শোধ করে দেবো। ওদের গ্রামছাড়া করব। আর তৃণমূলের করা সমস্ত মিথ্যে মামলাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। শুধু আর চারটে মাস সহ্য করুন। আমরা এলে বদলও হবে, বদলাও হবে। বদলা নেবই। কাউকে ছাড়বো না।”
এরপরই তিনি বলেন, “আর পঞ্চায়েতের মতো ভোট নয়। এবার আপনাদের ভোট আপনারাই দেবেন। তার ব্যবস্থা হচ্ছে। পুলিশকে বুথের কাছে যেতেই দেওয়া হবে না। দিল্লির পুলিশ বুথ পাহারা দেবে। আর আমাদের হাজার হাজার কর্মী গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় থাকবে। গণ্ডগোল করলে হাসপাতালে যেতে হবে। তৃণমূল পারেনি, বিজেপিই (BJP) গড়বে সোনার বাংলা।”