রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গ বিজেপির সংগঠন নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। আরও খর্ব করা হল দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর ক্ষমতা। এবার থেকে জেলা পার্টি নিয়ে কোনও সমস্যা থাকলে তা সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতিদের জোন ও বিভাগের ইনচার্জদের জানাতে হবে। সমস্যার সমাধান করবে জোন ও বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা, এমনই সিদ্ধান্ত দলের।
জোন ও বিভাগের নেতারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন, জেলা পার্টির কোনও বিষয়ে সেই জেলার সভাপতিরা তাঁদের কোনও শুনতে চান না। সরাসরি তারা অমিতাভ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলেন। সেই অভিযোগ আসার পরই সম্প্রতি কলকাতায় দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে রাজ্য বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুনীল বনসল সিদ্ধান্ত নেন, জেলা পার্টির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে জোন ও বিভাগের নেতারা। দলের একাংশ মনে করছে, রাজ্য পার্টিতে অমিতাভ শিবিরের ক্ষমতা আরও খর্ব করা হল। ফলে চাপে অমিতাভ-সহ রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির। কারণ, দলের পুরনো নেতাদের একাংশের অভিযোগ এই অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেই। অমিতাভবাবু ও তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতারা যেভাবে রাজ্যের দল চালাচ্ছেন তাতে সংগঠন ক্রমশই দূর্বল হচ্ছে। এ রাজ্য নেতার অভিযোগ, নিজের একক সিদ্ধান্তে দল চালাচ্ছেন তিনি। অযোগ্যদের পদে বসিয়ে রেখে দিয়েছেন। কাছের লোকেদের পদে রাখছেন। পুরনোদের গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না। আর সবচেয়ে বড় বিষয়, বুথে লোক খুঁজতে মিসড কল দেওয়ার আহ্বান সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন অমিতাভ চক্রবর্তী। যা নিয়ে দলের মধ্যেই প্রবল সমালোচনার ঝড় ওঠে।
[আরও পড়ুন: নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে ‘হামলা’য় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা, পুলিশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে বিজেপি]
এদিন সুনীল বনসল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এখন থেকে জোন ও বিভাগ ইনচার্জদের কথা শুনতে হবে জেলা সভাপতিদের। অমিতাভর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা বঙ্গ বিজেপির সংগঠনের দায়িত্বে আসা অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ দলের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধনদের কথাও জেলা সভাপতিদের শুনতে হবে। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে দূর্বল ২৪টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রবাস শুরু করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতারা। দলের কাছে হারা সেই ২৪টি দূর্বল লোকসভা কেন্দ্রে বিস্তারক নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই বিস্তারকরাও এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তাদের রিপোর্টেও বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে। তাদের অনেকেই রিপোর্ট দিয়েছে, বহু লোকসভা কেন্দ্রে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন না। বড় অংশের নেতারা নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে গিয়েছেন। এই রিপোর্টে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রীতিমতো উদ্বিগ্ন।