বাবুল হক, মালদহ: উত্তরপ্রদেশে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হল রাজ্যের অন্তত ৯ জন শ্রমিকের। শনিবার দুপুর নাগাদ ভাদোহি এলাকার একটি কার্পেট কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা অন্তত ১১। তার মধ্যে ৯ জনই মালদার বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে। এঁদের বেশিরভাগের বাড়ি মালদার এনায়েতপুরে। ১ জনের বাড়ি মথুরাপুর এলাকার কমলপুর গ্রামে। মালদা পুলিশ সূত্রে খবর, নিহতরা আতাউর রহমান, আবদুল গফফর, সুভান আনসারি, ইসরাফিল মোমিন, আবদুল কালাম মোমিন, আলমগির মোমিন, আবদুল কাদির এবং মোসাওয়ার। এঁদের মধ্যে একমাত্র মোসাওয়ারের বাড়ি মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কমলপুরে। নিহতদের মধ্যে কারখানার মালিকও আছেন বলে অনুমান পুলিশের।
বেঙ্গালুরুর বায়ুসেনা ঘাঁটির পার্কিং লটে আগুনে পুড়ে ছাই ১০০ গাড়ি
উত্তরপ্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, ভাদোহির রোহতা বাজারে এক কার্পেট কারখানায় আচমকাই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। পাশের তিনটি বাড়িরও কিছুটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে বহু শ্রমিকের আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। দুর্ঘটনার পরই উদ্ধারকাজে নেমেছে এনডিআরএফ। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে শ্রমিকদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের আপ্রাণ চেষ্টা করছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কর্মীরা। কীভাবে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা না গেলেও, পুলিশের অনুমান, কারখানায় দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
‘কাশ্মীরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে’, সাংবাদিককে মারধরের পর হুমকি যুব সেনার
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, রোহতা বাজারে কার্পেট কারখানাটির মালিক কলিয়ার মনসুর নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগ, কার্পেট কারখানার আড়ালে অবৈধভাবে বাজি নির্মাণ করা হত এখানে। ফলে সেখানে দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল এবং সেখান থেকেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কারখানা মালিক কলিয়ারের ছেলে এবং আরও কয়েকজন আত্মীয় জখম হয়েছেন বিস্ফোরণে। জেলাশাসক রাজেন্দ্র প্রসাদ জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে আহতদের উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। বিস্ফোরণের নেপথ্যে কলিয়ারের ভূমিকা সন্দেহজনক হিসেবেই দেখছেন তদন্তকারীরা। তবে এই মুহূর্তে জীবিত অবস্থায় চাপা পড়ে থাকা মানুষজনকে উদ্ধার করতেই তৎপর পুলিশ, এনডিআরএফ। এদিকে, মালদায় শ্রমিকদের বাড়িতে দুর্ঘটনার খবর পৌঁছাতেই শোকে ভেঙে পড়েন আত্মীয়, পরিজনরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, এক মাস আগেই এঁরা উত্তরপ্রদেশে গিয়ে কার্পেট কারখানার কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে কারখানার আড়ালে অবৈধ কিছু কাজ চলত, সেই অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা। নিহত শ্রমিকদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে দাঁড়াতে ইতিমধ্যেই তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরি। প্রশাসনের তরফে পরিস্থিতি দেখতে মালদা যাচ্ছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শুভেন্দু অধিকারী।
The post উত্তরপ্রদেশে কার্পেট কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত বাংলার ৯ শ্রমিক appeared first on Sangbad Pratidin.