সুকুমার সরকার, ঢাকা: এক সঙ্গে কাজ করতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সদ্যসমাপ্ত বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ঢাকার সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিল আমেরিকা। ভোটপ্রক্রিয়া অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়নি বলে ক্রমাগত তোপ দেগে গিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে বাইডেনের চিঠিতে স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তি পেয়েছেন আওয়ামি লিগ। কিন্তু হোয়াইট হাউসের এই অবস্থানে ক্ষোভ উগরে দিল বিএনপি।
আমেরিকার চিঠিতে বেজায় খুশি আওয়য়ামি লিগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু চরম হতাশা ব্যক্ত করেছে খালেদা জিয়ার দল। এই হতাশার জেরে তারা আক্রমণ শানিয়েছে হাসিনার দলকেই। তোপ দেগে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদশ বর্ডার গার্ডের সদস্য মারা গেলেও আওয়ামি লিগের প্রতিবাদ করার সাহস নেই। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য নিশ্চয়ই সবার মনে আছে, আপস হয়ে গিয়েছে। আমরা আছি, দিল্লিও আছে। দিল্লি আছে, আমরাও আছি। এই কথার অর্থ দেশের জনগণ নয় আওয়ামি লিগের অস্তিত্ব টিকে আছে দিল্লির করুণার উপর।”
[আরও পড়ুন: মায়ানমারের ছোড়া মর্টারশেল কুড়চ্ছে শিশুরা! বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে তোপ দাগল বিএনপি]
বিএনপি নেতা আরও বলেন, “বান্দরবনের নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত অসুরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সেখানে বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সীমান্তে বাংলাদেশি এলাকায় নারী-পুরুষ কেউ নিরাপদ নয়। জীবন যাচ্ছে মর্টারের সেলে। বাংলাদেশ সরকারের অভিসন্ধিপ্রসূত নীরব থাকা মূলত দেশের মানুষকে নতজানু করার এক গভীর চক্রান্ত। অথচ বিএনপির শাসনকালে দেশের সীমান্ত এলাকা ছিল সুরক্ষিত এবং জনগণও ছিলেন নিরাপদ। এখানেই বিএনপি এবং আওয়ামি লিগের মধ্যে পার্থক্য।” এর পরই আমেরিকার চিঠি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “বর্তমান বিনাভোটের সরকার প্রধানের কাছে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের একটি চিঠি নিয়ে প্রায় হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন ওবায়দুল কাদের।” রিজভীকে পালটা দিয়ে আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “এখন আপনাদের সাহসের উৎস কোথায়? কে সাহায্য করবে?”
উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগে ওয়াশিংটনের ভিসা নীতিকেই আওয়ামি লিগ সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিল বিএনপি। গত ৭ অক্টোবর নির্বাচনের আগে থেকে একাধিকবার মার্কিন প্রশাসনের কাছে আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে সুর চড়িয়েছে বিএনপি। অবশ্য সদ্যসমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ঢাকার সঙ্গে আমেরিকার বছর জুড়েই সংঘাত জারি ছিল। এমনকি ভিসানীতি নিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। ভোটপ্রক্রিয়া অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়নি বলে ক্রমাগত তোপ দেগে গিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। আমেরিকার সমস্ত অভিযোগের পালটা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে পাল্টাচ্ছে। গত রবিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাইডেনের চিঠি তুলে দেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব মাসুদ বিন মোমেনের হাতে।