সুকুমার সরকার, ঢাকা: অগোছালো দল নিয়ে জেরবার দেশের প্রাক্তন শাসকদল বিএনপি। তারপরও শুধুমাত্র দলের অস্তিত্ব ধরে রাখতে এবার নির্বাচনে লড়ছে তারা। ২০১৪ সালের মতো ভুলের খেসারত দিতে রাজি নয়। তবে প্রিয়াঙ্কাকে দলের প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করিয়ে চমক দিয়েছে। না তিনি হলিউড বা বলিউড তারকা নন। তিনি বাংলাদেশের ডা. সানসিলা জেবরিন, ডাক নাম প্রিয়াঙ্কা। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২২ জুন। সে হিসেবে বয়স ২৫ বছরের কিছু বেশি। তিনিই একাদশ নির্বাচনে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী। সম্ভবত ডা. সানসিলা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে যাঁরা বিভিন্ন দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে সবার ছোট।
[মায়ানমারের উপর চাপ বাড়িয়ে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগ মার্কিন দূতের]
পেশায় চিকিৎসক সানসিলা প্রার্থী হয়েছেন শেরপুর-১ আসনে। তিনি শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. হজরত আলির মেয়ে। এ আসনে বিএনপির মূল প্রার্থী ছিলেন হজরত আলি। তিনি-সহ বিএনপির তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়েছে সানসিলার। তিনিই এ আসনে বিএনপির একমাত্র প্রার্থী। সানসিলা স্থানীয়দের কাছে প্রিয়াঙ্কা নামে পরিচিত। রাজনীতিতে আনকোরা প্রিয়াঙ্কা চিকিৎসক হিসেবে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রভাষক। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া ডা. সানসিলার তথ্যানুযায়ী, তিনি ২০০৮ সালে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি পাস করেন ২০১০ সালে। আর এমবিবিএস পাস করেন ২০১৬ সালে। শেরপুর-১ আসনে চারজনকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। চার ব্যাংকের ঋণখেলাপির দায়ে প্রিয়াঙ্কার বাবা হজরত আলির মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এ ছাড়া জেলা যুবদল সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফজলুল কাদের মনোনয়নপত্রে বিএনপির প্রার্থী বলে উল্লেখ করলেও এর সঙ্গে দলীয় মনোনয়নের চিঠি সংযুক্ত না করায় তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
[ভোটে নেই জিয়া পরিবারের কেউই, উদ্বেগে বিএনপি]
হজরত আলি দীর্ঘদিন ধরে এ আসনে ধানের শীষের প্রতীকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তিনি ডজনখানেক বিভিন্ন মামলার আসামি হয়ে প্রায় তিন মাস ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন। হজরত আলির প্রার্থিতা আটকে যেতে পারে,বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বিএনপির হাইকমান্ড এ আসনে ডামি প্রার্থী হিসেবে তাঁর মেয়ে ডা. প্রিয়াঙ্কাকে মনোনয়ন দেয়। এদিকে, এই আসনে দীর্ঘ ২২ বছর পর দলীয় প্রার্থী পেলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি থেকে মহম্মদ নজরুল ইসলাম ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। জোটের রাজনীতির সমীকরণে পরের নির্বাচনগুলোতে এ আসনে ছাড় দিতে হয় ১৯৭১ সালে যুদ্ধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামাতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মহম্মদ কামারুজ্জামানকে। এবার দলীয় প্রার্থী পেয়ে খুশি স্থানীয় বিএনপি নেতৃত্ব। নেতা-কর্মীদের দাবি, প্রিয়াঙ্কা বিভিন্ন সময় তার নির্বাচনী এলাকায় চরাঞ্চলের দুঃস্থ মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা শিবিরের মাধ্যমে সেবা দিয়েছেন। নতুন কোনও ধরনের চমক সৃষ্টি না হলে তিনিই হবেন শাসকদল আওয়ামি লিগের হেভিওয়েট প্রার্থী টানা চারবারের নির্বাচিত এমপি ও জেলা আওয়ামি লিগের সভাপতি হুইপ মহম্মদ আতিউর রহমান আতিকের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী।
The post সর্বকনিষ্ঠ মহিলা প্রার্থীকে টিকিট দিয়ে বিএনপির চমক appeared first on Sangbad Pratidin.