সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোভিডে (Covid-19) মৃত্যুতেও যেন শান্তি নেই! একটি অ্যাম্বুল্যান্সে ২২টি নিষ্প্রাণ দেহকে গাদাগাদি করে পাঠানো হল সৎকারের কাজে। মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) বিড়ের ঘটনায় হতবাক গোটা দেশ। এই ঘটনার পর হাসপাতাল সুপার শিবাজি সুকরে স্বীকার করেছেন, তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত অ্যাম্বুল্যান্স ছিল না। তাই এই ব্যবস্থা।
দিল্লি (Delhi) থেকে কানপুর (Kanpur)- গণচিতা জ্বলছে। কোথাও অক্সিজেনের অভাবে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। কোথাও মানুষের প্রাণ যাচ্ছে হাসপাতালে গ্যাস লিক করে। কিন্তু রবিবার মহারাষ্ট্রের বিড়ের এই ঘটনা যেন সব কিছুকে ছাপিয়ে গেল। স্থানীয় আম্বাজোগাইয়ে করোনার চিকিৎসা চলছে জেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতালে। গত শনিবার থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ৩০ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। এদিকে মর্গও ছাপিয়ে গিয়েছে করোনা রোগীর মৃতদেহে। এই অবস্থায় হাসপাতালে থাকা একটি অ্যাম্বুল্যান্সেই ২২ জনের দেহ সৎকারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘কাপ্পানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন’, যোগী সরকারকে কড়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের]
এই ঘটনার পর হাসপাতাল সুপার জানান, “প্রথমবার যখন করোনা হয়, তখন আমাদের পাঁচটি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়েছিল। করোনার প্রকোপ খানিকটা কম হলে তিনটি অ্যাম্বুল্যান্স আমাদের থেকে তুলে নেওয়া হয়। ফলে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়েই আমরা পরিষেবা চালিয়ে যাচ্ছি।” এই ঘটনার পর গাফিলতির কথা স্বীকার করছে জেলা প্রশাসনও। এক কর্তা জানিয়েছেন, “আমরা নিরুপায়। কারণ, প্রান্তিক এই জেলার ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে একটি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। যেখানে করোনায় মৃতদের দেহ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা খবর নিয়ে দেখেছি, সেই সময় ওই কোল্ডস্টোরেজও ভর্তি ছিল। তাই উপায় না দেখে আমরা একটা অ্যাম্বুল্যান্সেই ২২টি দেহ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।” ভাবা যায়! কিছুতেই ভাবতে পারছে না দেশ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু কিছু করার নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও। হাসপাতাল সুপার শিবাজি সুকরের দাবি, সেই ১৭ মার্চ থেকে আরও তিনটি অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু কেউ তাঁদের কথা শোনেননি।
[আরও পড়ুন: রোগীর মৃত্যুর গুজবে রণক্ষেত্র হাসপাতাল! হেলমেট, ফ্যান দিয়ে মারধর নার্সকে]
এর মধ্যেই আবার ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদের বিজেপি সদস্য সুরেশ ধাসে। তাঁর অভিযোগ, বিড়ের হাসপাতালের ঘটনা প্রমাণ করল রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বলে আর কিছু নেই। তাঁর দাবি, “হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য বিধায়ক ফান্ড থেকে টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মুম্বই থেকে এতদিনে সেই টাকা আসেনি। কারণ, এই অঞ্চলে জিতেছেন বিরোধীরা।” এই ঘটনায় দায় এড়িয়েছেন স্থানীয় পুরসভার অফিসাররাও। তাঁদের দাবি, এতদিন এই ব্যাপারে কোনও কথাই পুরসভাকে জানানো হয়নি।