ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: করোনার (Coronavirus) গেরোয় গত বছর থমকে গিয়েছিল কবিগুরুর স্মৃতিধন্য পৌষমেলার (Poush Mela) ১২৫তম উদযাপন। গ্রাম ছাড়া রাঙা মাটির সেই আঙিনায় কালে কালে বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম মাইলফলক হয়ে ওঠা মেলাটি কি এবারও ব্রাত্য থেকে যাবে বারো মাসের তেরো পার্বণে? এই প্রশ্নে মেলার অন্যতম আয়োজক বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এখনও নীরব। ফলে পৌষমেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। অনিশ্চিত এই আবহেই শান্তিনিকেতনে (Shantiniketan) এবার বিকল্প পৌষমেলা আয়োজনের পরিকল্পনা করছে বোলপুর পুরসভা।
পূর্বপল্লী মাঠে এই পৌষমেলা করতে চেয়ে বিশ্বভারতী এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের কাছে ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছে বোলপুর পুরসভা (Bolpur Municipality)। বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University) কর্তৃপক্ষ সেখানে মেলা করার অনুমতি না দিলে শহরের কাছেই শিবপুর মৌজার গীতবিতান টাউনশিপে বা শহরেরই ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প পৌষমেলা করা হবে বলে জানিয়েছেন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ।
পুরসভার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীরা। এ পর্যন্ত অবশ্য বিশ্বভারতীর তরফে পুরসভার আবেদনের জবাব দেওয়া হয়নি। প্রসঙ্গত, শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা মেলা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের হলেও বরাবর তা আয়োজন এবং পরিচালনা করে থাকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। গতবছর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মেলা আয়োজনের দায়িত্ব না নেওয়ায় শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা হয়নি।
[আরও পড়ুন: ‘অন্যের রান্নাঘরে যৌন মিলন করেছিলাম’, নুসরতের শোয়ে গোপন কথা ফাঁস ঋতাভরীর]
গতবছরের টানাপোড়েনের কথা মাথায় রেখে এবার মেলা আয়োজন করতে চেয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে চিঠি দেয় বোলপুর পুরসভা। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের নিয়ম এবং নির্দেশ অনুসারে এবার ১২৫তম বর্ষে পৌষমেলা আয়োজনের অনুমতি চেয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট যেভাবে ২০ হাজার টাকা দিয়ে মেলার মাঠ ব্যবহার করে সেই টাকা দেওয়ার পাশাপাশি মেলার পরিচ্ছন্নতা এবং সুরক্ষার নিরিখে গ্রিন ট্রাইবুনালের বিধি মানার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। ট্রাস্টের সঙ্গে যৌথভাবে মেলা আয়োজনের পর কোভিডবিধি মেনে ছ’দিনের মধ্যে মাঠ ফেরত দেওয়ার কথাও জানিয়েছে পুরসভা।
২৩ ডিসেম্বর পৌষমেলা করার দাবি জানিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে চিঠি দিয়েছে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি ও পৌষমেলা বাঁচাও কমিটিও। ওই চিঠি পাওয়ার পরই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলার আয়োজন করবে কিনা, তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।