সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজ দ্বিতীয়া। মায়ের বোধনের বাকি চারদিন। তবে কলকাতার ঠনঠনিয়ার দত্ত বাড়িতে পুজো(Bonedi Barir Durga Puja) শুরু হয়েছে মহালয়া থেকেই। পুজো হবে দশদিন। সেজে উঠেছে ঠাকুরদালান। একে একে আসতে শুরু করেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা পরিবারের সদস্যরা। ১৭০ বছর ধরে এইভাবেই পুজো করে আসছেন দত্তরা।
আর পাঁচটা বনেদি বাড়ির পুজোর থেকে এই পরিবারের পুজো আলাদা। ঠনঠনিয়ায় দত্ত বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা সুবর্ণ বণিক দ্বারিকানাথ দত্ত ছিলেন ব্যবসায়ী। মণিমানিক্যের কারবারে বিপুল লাভ করেছিলেন। প্রথমে হুগলির আদি সপ্তগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। হুগলির বন্দর বন্ধ হওয়ার পর ঠনঠনিয়া এলাকায় দত্তবাড়ির তৈরি করেন ১৮৫০ সালে। পুজো শুরু হয় আরও পাঁচবছর পরে।
এ বাড়িতে মা পূজিত কন্যা রূপে। দেবাবিদেব মহাদেবের কোলে আসীন তিনি। বৈষ্ণব নিয়মে পুজো হয়। তবে অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে সন্ধিপুজোর সময় মাকে চামুণ্ডারূপে পুজো করা হয়।
এখানেই স্বতন্ত্র হয়ে ওঠে ঠনঠনিয়ার দত্ত বাড়ির পুজো। একদিকে বৈষ্ণব বাড়ি। অন্যদিকে চামুণ্ডাপুজো। দেবী চামুণ্ডার পুজোতো রক্ত ও মাংস ছাড়া হবে না। তাহলে উপায়? মাসকলাইয়ের ডাল ভোগ হিসাবে দেওয়া হল। হিন্দি শব্দে মাস শব্দের অর্থ মাংস। আনা হল রক্ত চন্দন। শুরু হল পুজো।
নবমীর দিন কুমারী পুজোর সঙ্গে সধবা পুজোও করা হয়। পুজোর চারদিনই ১৪ মন আতপ চাল ও আড়াই মন চিনি দিয়ে মিষ্টি তৈরি করে মায়ের কাছে নিবেদন করা হয়। ধুনো পোড়ানোরও রীতি রয়েছে।
পুজোর সময় বাড়ির ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে। দশমীতে আঁশমুখের পর দেবীকে বরণ করে পরের বছরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। কলকাতার দুর্গাপুজোয় বিদেশের দর্শনার্থীদের কাছে সেরা ডেস্টিনেশন এই ঠনঠনিয়া বাড়ির দুর্গাপুজো।