সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধুঁকছে গ্রন্থাগার (Library) সংস্কৃতি! তবু গ্রন্থপ্রিয় মানুষের কাছে বইয়ের কদর আজও আলাদা। ফলে গ্রন্থাগার থেকে বই নিয়ে রসিয়ে রসিয়ে পড়তে গিয়ে দেরি করে বই ফেরত দেওয়ার ঘটনাও ঘটে হামেশাই। সেক্ষেত্রে মোটা জরিমানাও হয়। কিন্তু লক্ষাধিক টাকা জরিমানাটা নেহাত বাড়াবাড়ি। কিন্তু তাই ঘটেছে লন্ডনের (London) একটি গ্রন্থাগারে। গ্রাহকের বই ফেরত না দেওয়ার সময়কাল বিরাট। মাঝের সময়ে দুই প্রজন্ম জন্মে যুবক হয়ে গিয়েছে! তার মানে কত বছর?
প্রায় অর্ধশতক। হ্যাঁ, ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (University College London Library) গ্রন্থাগার থেকে বই নিয়ে প্রায় ৪৮ বছর পরে তা ফেরালেন এক গ্রাহক । যে ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে লন্ডন শহরে। জানা গিয়েছে গত শতাব্দির সাতের দশকে ১৯৭৪ সালের গ্রীষ্মের মরশুমে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (UCL) গ্রন্থাগার থেকে ওই বইটি নিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। যা তিনি সম্প্রতি ফেরত দিয়েছেন। তাতেই ওই ব্যক্তিকে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেছে গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ। কেন?
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনের পথে পথে ছড়িয়ে মৃতদেহ! বহু মানুষকে দেওয়া হল গণকবর]
আসলে বইটি ফেরত না দেওয়ায় প্রতিদিন ১৩ সেন্ট (১০০ সেন্টে ১ ডলার) করে জরিমানা হয় গ্রাহকের। অর্ধশতকে যার মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৪৮ মার্কিন ডলার। ভারতীয় টাকায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার ২৪৪ টাকা। সবার কৌতূহল সেই মহার্ঘ বইটি কী যার জন্য লক্ষাধিক টাকা গুনতে হল জনৈক গ্রাহককে। গ্রাহক ভদ্রলোকটিই বা কে ? গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বইটি একটি রোমান কমেডি (Roman Comedy) কোয়েরোলাস (Querolus)। যা লাতিন ভাষায় লেখা। অজ্ঞাতনামা লেখকের রোমান নাটক। আর মহান গ্রাহকের পরিচয়?
গত বুধবার ইউসিএল তাদের ওয়েবসাইটে বইটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে বইয়ের ছবিও দেওয়া হয়। সেখানে লেখা হয়, বইটি চলতি বছর কুরিয়ারে লাইব্রেরিয়ান সুজানা ট্রেইয়ের টেবিলে এসে পৌঁছেছে। বইয়ের গ্রাহক একটি চিরকুটও পাঠিয়েছেন। তবে সেখানে নিজের নাম-পরিচয় উল্লেখ করেননি তিনি।
[আরও পড়ুন: বিদ্রোহ রুখতে মরিয়া রাজাপক্ষে, জরুরি অবস্থা-কারফিউর পর শ্রীলঙ্কায় বন্ধ সোশ্যাল মিডিয়াও]
লাইব্রেরিয়ান জানিয়েছেন, কোভিডের কারণে প্রায় দু’ বছর বাড়িতে বসেই কাজ করছিলেন। সম্প্রতি দপ্তরে যোগ দেন। এর মধ্যে প্রচুর বই জমা পড়েছিল। তারই একটি ওই ‘ঐতিহাসিক বই’। সঙ্গে চিরকুট, ”প্রিয় লাইব্রেরিয়ান, আমি বইটি ফেরত দিতে ভয় পাচ্ছি। ফেরত দেওয়ার সময়সীমা প্রায় ৫০ বছর আগেই পেরিয়ে গিয়েছে! আমার বিশ্বাস, এটি এখন একটি অ্যান্টিক বইয়ে পরিণত হয়েছে।”