সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ডাকসাইটে বামনেতা শ্যামল চক্রবর্তীর কন্যা। আঁতুরঘর ঘর থেকেই উষসী চক্রবর্তীর বামযোগ। বরাবর বাম শিবিরের হয়ে পথে নেমেছেন। হেঁটেছেন প্রতিবাদী মিছিলে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে বাবা শ্যামল চক্রবর্তীর নিবিড় সম্পর্ক ছিল। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছে 'বুদ্ধমামা'। তাই বৃহস্পতিবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharjee) প্রয়াণের খবর পেতেই পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ছুটে গিয়েছেন উষসী চক্রবর্তী (Usashi Chakraborty)।
শোকবিহ্বল অভিনেত্রী জানালেন, "সততা, স্বচ্ছতার রাজনীতির দৃষ্টান্ত বুদ্ধবাবু। আমি বুদ্ধমামা বলতাম। সতীর্থরা তৈরি করে গিয়েছেন। একজন একজন করে চলে যাওয়া মানে, সেই ইতিহাসটাও কোথাও যেন মুছে যাওয়ার চেষ্টা হবে। সেটা যেন না হয়। সেই সততার রাজনীতি স্বচ্ছতার রাজনীতি যেন বজায় থাকে। রাজনীতি মানেই চুরি কিংবা অস্বচ্ছতা নয়। বুদ্ধবাবুর প্রজন্ম এটা প্রমাণ করে দিয়ে গিয়েছেন। একথা মনে রাখতে হবে। তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে হবে। সেটাই বুদ্ধমামার প্রতি আমাদের সকলের সঠিক শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হবে। আমার কাছে এটা ব্যক্তিগত ক্ষতি। ছোটবেলায় নানারকম স্মৃতির মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি।"
[আরও পড়ুন: বুদ্ধবাবু নেই, কাঁদছেন শ্রীলেখা, ‘ক্ষমাপ্রার্থী’ অনীক, সিপিএম ছাড়লেন ‘বুদ্ধপন্থী’ জীতু! কমলেশ্বর বলছেন…]
একুশের বিধানসভা থেকে চব্বিশের লোকসভা ভোট, বামেদের হয়ে পথে নেমেছিলেন উষসী চক্রবর্তী। আজ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন তিনি। স্মৃতিচারণ করে বললেন, "আজ আমার অনেক কিছু মনে পড়ছে। বাবার সঙ্গে ওঁর খুবই ভালো যোগাযোগ এবং সম্পর্ক ছিল। দীর্ঘ কয়েক দশকের বন্ধুত্ব ছিল। ব্যক্তিগত জীবনের নানা চড়াই-উতরাই, কঠিন সময়ে বুদ্ধমামাকে পাশে পেয়েছি। মাঝে মাঝে ওঁর কাছে বকাও খেয়েছি। এবং আমার রাজনৈতিক দর্শন গড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও ওঁর অনুপ্রেরণা রয়েছে। আশা করি বাংলার মানুষকে ওঁর স্বচ্ছতা অনুপ্রেরণা জোগাবে আজীবন। এর থেকে বেশি কিছু বলার মতো অবস্থায় নেই আমি।"
'বুদ্ধের মহানির্বাণে' বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কাঁদো কাঁদো আকাশ। কমরেড বুদ্ধবাবু আর নেই। দীর্ঘ কয়েক দশকের রাজনৈতিক জীবন কাটিয়ে অমৃতলোকে পাড়ি দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। বাম জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রী। শেষ আইকনকে হারিয়ে ‘অভিভাবক’হীন বামপন্থীরা। একজন অভিজাত, রুচিশীল, সৎ তথা সংস্কতিমনস্ক রাজনীতিককে হারিয়ে রং-দল নির্বিশেষে শোকবিহ্বল রাজনীতির দুনিয়ার সদস্যরা।