সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিনেমাপ্রেমী, আদ্যন্ত সংস্কৃতিমনস্ক হওয়ায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharjee) স্নেহধন্যা ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। অভিনেত্রীর গুণমুগ্ধও ছিলেন তিনি। সিনেমা দেখে ঋতুপর্ণাকে একাধিকবার প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। এমনকী তাঁর ঝুলিতে জাতীয় পুরস্কার আসার পরও ফোন গিয়েছিল বুদ্ধবাবুর তরফে। রুচিশীল, সংস্কৃতিমনস্ক, বুদ্ধিদীপ্ত এবং সেই সঙ্গে একজন রসিক মানুষকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে শুক্রবার আবেগে ভাসলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta)।
বাম মতাদর্শে বিশ্বাসী হওয়ায় মরণোত্তর দেহদান করে গিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ঋতুপর্ণাও সেই পথেই হাঁটবেন বলে জানিয়ে দিলেন। অভিনেত্রীর পিসি, পিসেমশাইও সেই একই পথের পথিক। তাঁদের থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করলেন ঋতুপর্ণা। অভিনেত্রীর কথায়, দাহ না করে দেহ দান করলে সেটা কোনও মৃত্যুপথযাত্রীকে জীবনের পথে ফেরাতে পারবে। তার মধ্যে দিয়ে তিনিও চিরকাল বেঁচে থাকতে পারবেন।
শুক্রবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দলীয় কার্যালয়ের অফিসের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তবে ততক্ষণে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মরদেহ নীলরতন সরকার হাসপাতালের পথে। জনজোয়ার ঠেলেই অভিনেত্রী ছুটে যান প্রিয় নেতার শববাহী গাড়ির দিকে। ঋতুপর্ণার শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য কিছুক্ষণ গাড়ি থামেও। আবেগে ভেসে গিয়ে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানালেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। ঋতুপর্ণা অভিনীত 'আলো' এবং 'পারমিতার একদিন' সিনেমা দুটি যে বুদ্ধদেববাবুর প্রিয় ছিল সেকথাও জানান অভিনেত্রী। ছেলে অঙ্কন যখন আমেরিকায় ভূমিষ্ঠ হয়, তখনও ঋতুপর্ণাকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বুদ্ধপ্রয়াণের পর সেসব স্মৃতিতে ভেসেই আবেগাপ্লুত ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
[আরও পড়ুন: অভিশপ্ত আগস্ট! ‘ধনঞ্জয়ের ফাঁসির সাজা ভুলিনি’, নাম না করে বুদ্ধদেবকে বিঁধলেন কবীর সুমন!]
বৃহস্পতিবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণের পর শোকবার্তা জানাতে গিয়ে স্মৃতির সরণি বেয়ে ঋতুপর্ণা বলেছিলেন, "মনে পড়ছে সেই দিনটি, যেদিন উনি আর তৎকালীন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু আমার বিয়েতে এসেছিলেন। আসলে এইসব মানুষরা বিরল এই পৃথিবীতে। তাঁদের মানসিকতা, শিক্ষাজ্ঞান আমাদের সমাজকে সবসময় উর্বর করেছে। আজ ওঁর মতো একজন শিক্ষিত মানুষ, এত বড় একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব চলে গেলেন ঠিকই, কিন্তু তিনি যা রেখে গেলেন সেটা আমাদের কাছে বিশাল সম্পদ। যা কিনা আগামী প্রজন্মের জন্য এক উদাহরণ। তাঁকে স্যালুট।"