সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করমণ্ডল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ভয়ংকর দুর্ঘটনা। চলতি মাসে ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (NCRB) বলছে, গত দশ বছরে স্রেফ রেল দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছেন আড়াই লক্ষের বেশি মানুষ! তবু এই রেল ব্যবস্থাই দেশের সিংহভাগ মানুষের নির্ভরযোগ্য গণপরিবহণ। ফলে রেল যাত্রায় আতঙ্ক বাড়লেও তা এড়ানো কঠিন। এই অবস্থায় তৃতীয় মোদি সরকারের বাজেটের দিকে তাকিয়ে ছিল আমজনতা। মনে করা হচ্ছিল, একের পর এক দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে যাত্রী সুরক্ষায় বিশেষ বরাদ্দ হতে পারে। যদিও হতাশ করল তৃতীয় মোদি সরকারের বাজেট। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সামান্যই বাড়ানো হল রেলের বরাদ্দ।
উল্লেখ্য, বছর খানেকের মধ্যে বেশ কয়েকটি ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে দেশ। বালেশ্বরের বাহানাগা বাজারের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৯৩ জনের। গত ১৭ জুন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় মত্যু হয়েছে ২ জনের। প্রতি ক্ষেত্রেই সামনে এসেছে যাত্রী সুরক্ষার প্রশ্ন। অভিযোগ উঠেছে, রেলের গাফিলতি নিয়ে। এই অবস্থায় দুর্ঘটনা এড়াতে 'কবচ'(Kavach) প্রযুক্তি বা স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা পদ্ধতি 'অটোমেটেড ট্রেন প্রোটেকশন সিস্টেম' এর দাবি জোরালো হচ্ছিল।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাজেটে কীসের দাম বাড়ল? দামি হল কোন পণ্য?]
সেন্সর ভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় এই সুরক্ষা ব্যবস্থা। ট্রেনের ব্রেকিং সিস্টেম বা ড্রাইভার জরুরি অবস্থায় ট্রেন থামাতে ব্যর্থ হলে ট্রেনটি নিজে থেকেই থেমে যাবে। ফলে যে কোন ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পাবে ট্রেন। এটিকেই 'কবচ' বলা হয়ে থাকে। ইতিমধ্যেই সাউথ সেন্ট্রাল রেলওয়ে দ্বারা প্রযুক্তিটির ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে ভারতীয় রেল। বারবার রেল দুর্ঘটনায় বিরোধীরা দাবি করছিল, 'কবচ' দিয়ে সুরক্ষিত করা হোক বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ককে। যা রেলে বড় অঙ্ক বরাদ্দ না হলে সম্ভব না। সেই কারণেই এদিনের বাজেট ঘোষণার দিকে তাকিয়ে ছিল দেশ।
[আরও পড়ুন: অন্ধ্রের জন্য বিশেষ প্যাকেজ, বিহারের জন্য কল্পতরু, শরিকদের ঝুলি ভরল নির্মলার বাজেটে]
যদিও বাজেট ২০২৪(Budget 2024) যাত্রীদের দাবি পূরণে নতুন কোনও দিশা দেখাতে পারল না তৃতীয় মোদি সরকার। সেই 'গয়ংগচ্ছ' মনোভাবই ধরা পড়ল। আতঙ্ক বাড়ল রেল যাত্রীদের। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ নিয়ম মাফিক ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রেলে বরাদ্দ ঘোষণা করলেন। সেই পরিমাণ হল ২ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বিগত অর্থবর্ষে যা ছিল ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বিরোধীরা বলছে, এনডিএ শরিকদের মন রাখতে এই বাজেট হয়েছে। সেই কারণেই নীতীশ কুমারের বিহার এবং চন্দ্রবাবু নাইডুর অন্ধ্রপ্রদেশ কোটি কোটি টাকার প্যাকেজ পেয়েছে।