সুকুমার সরকার, ঢাকা: বুলবুলের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশে। লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বিধ্বংসী এই ঝড়ে বাংলাদেশে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে প্রায় ৬০ হাজার বাড়ি। বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় অঞ্চল। দুই বাংলায় বুলবুলের বলি মোট ২১ জন।
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপটে সুন্দরবনের অনেক গাছাপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর বুলবুল বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে আছড়ে পড়ে শনিবার রাত ৩টে নাগাদ। সেই সময় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। বুলবুলের তাণ্ডবে বাংলাদেশেও ভেঙে পড়ে প্রচুর কাঁচা বাড়ি, গাছ। সূত্রের খবর, বুলবুলের তাণ্ডবেই রবিবার রাত পর্যন্ত ঘর ও গাছ চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ১৪ জনের। মৃতদের মধ্যে খুলনার ২ জন। বাগেরহাটের ২ জন। পটুয়াখালীর ১ জন। পিরোজপুরের ১ জন। মাদারীপুরের ১ জন। ভোলায় ১ জন। গোপালগঞ্জে ১ ও বরগুনায় আরও ২ জন। বুলবুলের দাপট থেকে বাঁচাতে উপকূলীয় জেলার প্রায় ২১ লাখ বাসিন্দাকে আগেভাগেই নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেই কারণে বহু জীবন রক্ষা পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের সাগরে দাপট দেখানোর পর বুলবুল বাংলাদেশে প্রবেশের সময় তার অবস্থান ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। একপাশে পশ্চিমবঙ্গ, আর বাকি তিন পাশে ছিল সুন্দরবন। সুন্দরবন অতিক্রম করতে ঘূর্ণিঝড়ের দীর্ঘ সময় লাগে, এবং গতিও কমে আসে। ফলে পূর্ণ শক্তি নিয়ে বুলবুল বাংলাদেশের স্থলভাগে আঘাত করতে পারেনি। রাজধানী ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘বুলবুল যে গতিতে আসার কথা ছিল, সেই গতিতে আসেনি। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি প্রথমে সুন্দরবনের সাগরদ্বীপে আঘাত করে। এরপর এটি বাংলাদেশের সুন্দরবন লাগোয়া খুলনায় ঢুকে পড়ে। দুই দেশের সুন্দরবনের অরণ্যের গাছপালায় বাধা পেয়ে দুর্বল বুলবুলের কেন্দ্রে বায়ুর গতিবেগ কমে যায়। জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতাও কমে আসে।’ কিন্তু গতি কমিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ সত্ত্বেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন জেলায়। ইতিমধ্যেই দেশের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: শক্তি কমিয়ে বাংলাদেশে বুলবুল, বিরাট ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচিয়ে দিল সুন্দরবন]
The post বুলবুলের দাপটে ব্যাপক ক্ষতি বাংলাদেশেও, লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা appeared first on Sangbad Pratidin.