শুভঙ্কর বসু: কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) কার্যত মুখ পুড়ল কেন্দ্রের কর্মিবর্গ প্রশাসনের (DoPT)। বুধবার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Alapan Banerjee) আরজির শুনানিতে হাই কোর্টে ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্নে জর্জরিত হয়েছেন কেন্দ্রের আইনজীবী। তবে এদিন মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। ২ নভেম্বরের আগেই মামলার রায় দান হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের তদন্তে কেন্দ্রের DoPT বিভাগের এক্তিয়ারকে চ্যালেঞ্জ করে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের (CAT) দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু আচমকাই সেই আরজির শুনানি কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করে CAT। এই মামলা স্থানান্তরকে চ্যালেঞ্জ করে মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা।
[আরও পড়ুন: জল্পনাই সত্যি, তৃণমূলে যোগ দিলেন রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ কৃষ্ণ কল্যাণী]
তড়িঘড়ি শুনানির আরজি এদিন গ্রহণ করেছিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন দ্বিতীয়ার্ধে সেই মামলার শুনানি হয়। তবে স্থগিত রয়েছে রায়দান। ২ নভেম্বর CAT-র প্রিন্সিপাল বেঞ্চে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরজির শুনানি হওয়ার কথা। তার আগেই কলকাতা হাই কোর্ট রায় দেবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি।
শুনানির শুরু থেকেই কেন্দ্রের আইনজীবীকে আদালতের প্রশ্নবাণের মুখে পড়তে হয়। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, ”যশ পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি, তা নিয়ে আলাপনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করা, সবটাই এ রাজ্যকেন্দ্রিক।” তবে কেন সেই মামলার শুনানি দিল্লিতে পাঠানো হল, তা জানতে চান বিচারপতি। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মামলাকারী, মামলার তড়িঘড়ি শুনানির দাবি তিনি জানাতেই পারেন। কিন্তু কেন্দ্র কেন তড়িঘড়ি এই মামলা শুনানির জন্য দিল্লিতে নিয়ে গেল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, “প্রকৃত ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।” সবমিলিয়ে কার্যত হাই কোর্টে নাস্তানাবুদ হয়েছেন কেন্দ্রের আইনজীবী।
[আরও পড়ুন: দীপাবলিতে রাজ্যে বাজি পোড়ানো যাবে মাত্র ২ ঘণ্টা, অনুমতি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের]
যশ বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসে ২৮ মে কলাইকুণ্ডায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। কেন্দ্রের তরফে তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যশ বিধ্বস্ত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির কাজে ব্যস্ত বলে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন আলাপন। এনিয়ে সমস্যার সূত্রপাত।
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করে ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল ট্রেনিং। শুরু হয় তদন্ত। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগ একজন আমলার বিরুদ্ধে এই তদন্ত করতে পারে না বলে দাবি করেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যসচিব। তিনি পালটা সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হন। এবার তাঁর সেই আরজি রাজ্যের বেঞ্চে শুনানির বদলে দিল্লির প্রিন্সিপাল বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয় CAT। তাদের এহেন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এবার কলকাতা হাই কোর্টে যান আলাপন।