শুভঙ্কর বসু: আমফান দুর্নীতি মামলায় বড় ধাক্কা রাজ্যের। উচ্চ আদালতের নির্দেশে বণ্টন করা অর্থ অডিটের ভার গেল CAG’র হাতে। এছাড়া এই মামলায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করারও নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী ৩ মাসের মধ্যে অডিট সম্পূর্ণ করে CAG বিস্তারিত হিসেব দেবে হাই কোর্টকে। মূলত অর্থ এবং কীভাবে, কাদের মধ্যে, কত টাকা বণ্টন করা হয়েছে, সেটাই খতিয়ে দেখবে CAG.
মে মাসের শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানে (Amphan) ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ক্ষতিপূরণ নিয়ে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়তে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে। পরে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশে নতুন করে হিসেবনিকেশ, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নতুন করে তৈরি করে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ হয় বলে দাবি করে রাজ্য সরকার। তবে এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) দায়ের হয়েছিল মামলা। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি জানান, আমফান ক্ষতিপূরণের বণ্টন হওয়া অর্থ অডিটের ভার দেওয়া হল কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলকে (CAG)।
[আরও পড়ুন: একুশে ভরসা বাঙালি আবেগ! ‘শুধু বাংলা বললেই হয় না’, মোদিকে শোনালেন মমতা]
আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণবণ্টন নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে, এই মর্মে জুনের শেষদিকে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কৃষক সংগঠন। মামলা করেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংও।মঙ্গলবার সবকটি মামলা একত্রে শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। আমফানে ক্ষতিপূরণের জন্য রাজ্য সরকারের বরাদ্দ বাজেট ছিল ৬৩০০ কোটি টাকা, যার মধ্যে ২৫০০ কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্র। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যেকের প্রাপ্য ছিল ২০ হাজার টাকা করে। এখন এই টাকা কীভাবে বণ্টন করা হয়েছে, তা বিস্তারিত দেওয়া ছিল ‘এগিয়ে বাংলা’র ওয়েবসাইটে। কিন্তু সেসব দেখে সন্তুষ্ট হয়নি আদালত। এছাড়া ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের রিপোর্টেও অসন্তোষ ছিল বিচারপতিদের। এসবের জেরে CAG’কে দিয়ে অডিট করানোর নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: নাম বদলাচ্ছে মাঝেরহাট ব্রিজের, উদ্বোধনের ২ দিন আগে ঘোষণা মমতার]
আমফান দুর্নীতি ইস্যুতে হাই কোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেন বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। তাঁর প্রতিক্রিয়া, পশ্চিমবঙ্গ সরকার বরাবর দাবি করে এসেছে, আমফানে উদ্বৃত্ত টাকা খরচ করেছে তারা। এই পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টের রায়কে স্বাগত। অডিটের ফলে সব হিসেব স্বচ্ছ হয়ে যাবে। একই বক্তব্য বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর। তাঁর দাবি, যদি কোনও সরকারি কর্মচারি এর সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।