গোবিন্দ রায়: এবার কি জেলা বিচারক নিয়োগও চুক্তিভিত্তিকভাবে হবে? বুধবার সেই প্রশ্নই উঠল কলকাতা হাই কোর্টে। সম্প্রতি দুই ২৪ পরগনার জেলা আদালতে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল কোর্ট এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন। এদিন ওই মামলাতে সেই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। একই সঙ্গে, আপাতত আদালতে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। সেপ্টেম্বর মাসে মামলার পরবর্তী শুনানি।
মামলাকারী সংগঠনের তরফে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম ও গোপা বিশ্বাস জানান, "রাজ্যের বিভিন্ন জেলা আদালতে বহু শূন্যপদ রয়েছে। তার মধ্যে গত বছরের নভেম্বর মাসের হিসাব অনুযায়ী এই দুই জেলা মিলিয়েই রয়েছে পাঁচশোর বেশি শূন্যপদ। উত্তর ২৪ পরগনায় ২৬৭ শূন্যপদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২৫৭ শূন্যপদ। সম্প্রতি এই দুই জেলা আদালতে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আদালতে কেন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হবে? সেই প্রশ্ন তুলে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল কোর্ট এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন।"
[আরও পড়ুন: পূর্ব কলকাতায় জলাভূমি বুজিয়ে চারতলা বাড়ি! আদালতের নির্দেশে বুলডোজার চালাল প্রশাসন]
মামলায় দাবি করা হয়েছে, সরকারের বিশেষ কিছু দপ্তর বা বিভাগ রয়েছে, যেখানে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা যায় না। সেই তালিকায় রয়েছে আদালতের কর্মী নিয়োগও। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকায় মামলায় তুলে ধরা হয়। আদালতে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের ফলে আদালতের গোপনীয়তা নষ্ট হয়। এক সময় বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়ারও আশঙ্কা থাকে। যদিও আদালতে রাজ্যের যুক্তি, ২০১৪ সাল থেকে রাজ্যের জেলা আদালতগুলিতে কোনও স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। ফলে প্রায় ২৫ শতাংশেরও বেশি শূন্যপদ পড়ে রয়েছে। তাই কর্মীর প্রয়োজনে তড়িঘড়ি এই কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে এদিন ১০ বছর পরেও কেন জেলা আদালতে স্থায়ী নিয়োগে অনিচ্ছুক রাজ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি মুখোপাধ্যায়। আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে তাঁর মন্তব্য, "যদি বিচারকও কম থাকে, তাহলে এভাবেই চুক্তিভিত্তিক জেলা বিচারক নিয়োগ হবে?"