গোবিন্দ রায়: আদৌ ইভটিজিং হয়েছিল কি? পানাগড়ে তরুণী মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম থেকেই এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে নানামত। মেয়ের মৃত্যুর রহস্যভেদে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মৃত সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মা। সেই মামলার শুনানিতে রাজ্য জানালো, অভিযোগ ভিত্তিহীন। কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে পানাগড়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চন্দননগরের বাসিন্দা বছর সাতাশের সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়। নৃত্যশিল্পীর পাশাপাশি তিনি ছিলেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার। জানা যায়, অভিশপ্ত রাতে পানাগড়ে জাতীয় সড়ক ধরে গাড়ি করে ফিরছিলেন সুতন্দ্রা। অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন মত্ত যুবক তাঁর গাড়ি ধাওয়া করে কটূক্তি করে। তরুণীকে ইভটিজিং করা হয়। তাঁদের হাত থেকে বাঁচতে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন সুতন্দ্রার চালক৷ তার ফলে নিয়ন্ত্রণ হারায় গাড়ি। প্রাণ হারান সুতন্দ্রা। যদিও ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইভটিজিংয়ের তত্ত্ব খারিজ করে দেন পুলিশ। পালটা দাবি করা হয় যে সুতন্দ্রার গাড়িই নাকি রেষারেষি করছিল অভিযুক্তদের সাদা গাড়ির সঙ্গে। প্রথমে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ করলেও পরে বয়ান বদল করেন সুতন্দ্রার গাড়িচালকও। এরপরই মেয়ের মৃত্যুর উপযুক্ত তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মৃতার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে রাজ্য বলে, অভিযোগটাই ভুয়ো। এদিকে মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, "২৪ ফেব্রুয়ারি ঘটনাটি ঘটে। চন্দননগরে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই ঘটনা সম্পর্কে আমিও অবগত। যে কেস রেজিস্টার হয়েছে তা কন্ট্রাডিকটেট। চন্দননগরে দায়ের হওয়া অভিযোগের প্রকৃতি নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। তার ভিত্তিতে আসানসোল পুলিশ কমিশনারেট সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে। এই একই অভিযোগ চন্দননগর থানাতেও করা হয়।" এরপর রাজ্য বলে, "৩জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বলেছে যে কোনও ইভটিজিং হয়নি।" এরপরই কাঁচরা থানাকে তদন্তের কথা বলেন মামলাকারীর আইনজীবী। তাঁর কথায়, "পুলিশের কাজ সত্য প্রকাশ্যে আনা।" দু'পক্ষের বক্তব্য শোনার পর কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।