দীপঙ্কর মণ্ডল: স্কুলের পর এবার কলেজ সার্ভিস কমিশনের (College Service Commission) নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। তথ্যের অধিকার আইনে জবাব পেয়ে ২০১৮ সালের কয়েকজন প্রার্থী এই দুর্নীতির খোঁজ পেয়েছেন। মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও অনেকে নিয়োগপত্র পাননি। উল্টোদিকে তালিকায় নাম না থাকা কয়েকজনকে বিভিন্ন কলেজে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্কুল শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের চাকরি প্রার্থীরা অগুনতি আন্দোলন করেছেন। এবার ক্ষোভের সেই তালিকায় ঢুকে পড়লেন কলেজে অধ্যাপনায় চাকরি প্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার উচ্চশিক্ষা দপ্তর, কলেজ সার্ভিস কমিশন এবং ইউজিসি পূর্বাঞ্চলীয় শাখায় এই বিষয়ে স্মারক লিপি জমা পড়েছে।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Delhi University) অ্যানথ্রোপলজির স্নাতকোত্তর আত্রেয় মণ্ডল তিনবার নেট ও দু’বার জিআরএফ উত্তীর্ণ। তাঁর ঝুলিতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল ও পিএইচডি আছে। মেধাতালিকায় তাঁর নিচে নাম থাকা প্রার্থী নিয়োগপত্র পেলেও আত্রেয় পাননি। ক্ষুব্ধ এই প্রার্থী জানিয়েছেন, “রাজ্যের ২০১৮ সালের কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার পর প্রকাশিত মেধা তালিকায় প্রার্থীর নামের পাশে প্রাপ্ত নম্বর বা অন্য কোনও তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। প্রার্থী কোন যোগ্যতার জন্য নিয়োগ পেলেন, আর অন্য প্রার্থী কেন নিয়োগ পেলেন না তা বোঝার উপায় নেই। আমরা তথ্যের অধিকার আইনে আবেদন করে এখন জানতে পারছি কলেজে নিয়োগে ভুরি ভুরি দুর্নীতি হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ‘শিয়াল চিহ্নে ভোট দিন’, কংগ্রেস কার্যালয়ের বাইরে পোস্টারে ছয়লাপ, তাজ্জব জলপাইগুড়িবাসী]
তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের একটি সংগঠন এদিন বিকাশভবনে লিখিত ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার তদন্ত দাবি করে। সংগঠনের সম্পাদক হিমাদ্রি মণ্ডল বলেন, “আরটিআই করে জানা গিয়েছে মেধা তালিকায় নাম না থাকলেও গণিত বিষয়ে একজন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভূগোল বিষয়ের একজনকে পিএইচডির নম্বর দেওয়া হয়নি। অনেককে জিআরএফ—এর নম্বর দেওয়া হয়নি। ইন্টারভিউতে ৪০ শতাংশ নম্বর রেখে প্রকৃত যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের নেট, সেট, এমফিল, পিএইচডি, পোস্ট ডক্টরেট, পাবলিকেশন, পড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকলেও অধিকাংশক্ষেত্রে মেধা তালিকার পিছনের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা। উচ্চশিক্ষা দপ্তর, কমিশন ও ইউজিসির কাছে তাঁদের দাবি, মেধা তালিকার নাম বহির্ভূত যারা নিয়োগ পেয়েছে খুব শীঘ্রই তার উপযুক্ত তদন্ত হোক। হাই-কোর্টের সাহায্য নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থীর ইন্টারভিউ-এর ভিডিও এবং অডিও রেকর্ডিং পুনর্মূল্যায়ন করা হোক।