রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: মাছের কাঁটা দখলের লড়াই! আর সেই লড়াইয়ে সারমেয়কূলের কাছে কার্যত হার মেনে গাছে আশ্রয় নিয়েছিল বাঘের মাসি। একদিন-দু’দিন নয়, একটানা দশদিন অভুক্ত অবস্থায় সেই ৭০ ফুট উঁচু শিমূল গাছেই কাটিয়ে দেয় বিড়ালটি। এদিকে নাছোড় সারমেয়কূলও। পালাবদল করে থানা সংলগ্ন গাছের তলায় কড়া পাহারার ব্যবস্থা করেছিল তারাও। শেষপর্যন্ত বিড়ালের একটানা কান্না শুনে আর থাকতে পারেননি থানার বড়বাবু। তিনিই খবর দেন দমকলবাহিনীকে। তাঁরাও মই নিয়ে গাছে ওঠার চেষ্টাও করেন। কিন্তু বিধি বাম। তাঁদের দেখে গাছের মগডালে চড়ে বসে বিড়ালটি। অবশেষে সোমবার অভিনব কায়দায় বিড়ালটিকে নামানো হয়।
বিড়ালের অনবরত কান্না শুনে দমকল ডাকেন থানার বড়বাবু। বারোবিশা থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে টানা দু’ঘন্টা চেষ্টা করেও গাছ থেকে বিড়ালকে নামাতে পারেনি। মই দিয়ে উপরে উঠতে গেলে বিড়ালটিও মগডালে চড়ে বসে। বেগতিক বুঝে হার মেনে নেন দমকলকর্মীরাও। শেষপর্যন্ত সোমবার ফের গাছ কাটার লোক ডাকে পুলিশ। অবশেষে তাঁরাই গাছে উঠে কায়দা করে বিড়ালকে নামান। প্রথমে গাছ আকড়ে ধরে থাকা অভুক্ত বিড়ালের চোখ গামছা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তারপর গাছেই বিড়ালটিকে প্লাাস্টিকের ব্যাগে ঢুকিয়ে তার মুখ বেঁধে দেওয়া হয়। দড়ি দিয়ে সেই ব্যাগ নামানো হয়। গাছ থেকে নামিয়েই ব্যাগের মুখ খোলামাত্র, এক ছুটে সকলের চোখের আড়ালে চলে গিয়েছে বিড়ালটি। প্রসঙ্গত, কুমারগ্রাম থানাতে চার-পাঁচটি কুকুর সব সময় ঘোরাঘুরি করে। বিড়ালও থানাতেই থাকে। কুকুরের তাড়া খেয়ে গাছে উঠে পড়েছিল বিড়ালটি। এলাকার বাসিন্দা হেমন্ত রায় বলেন, “এই বিড়াল গোটা এলাকার মানুষের একটি চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছিল। অবশেষে গাছ থেকে বিড়ালকে নামাতে পেরে সকলেই খুশি।”
[আরও পড়ুন: তৃণমূলে ফিরতে চান মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু! যোগাযোগ করছেন আরও ৩ বিধায়ক]
কুমারগ্রাম থানার আইসি বাসুদেব সরকার বলেন, “কুকুরের তাড়া খেয়ে বিড়ালটা গাছের এত উঁচুতে উঠে যাবে, তা ভাবতেও পারিনি। কিন্তু টানা দশ দিন বিড়ালটি গাছেই ছিল। না খেতে পেয়ে বিড়ালটি মরে যেত। মানবিকতার খাতিয়ে আমরা দমকল কর্মীদের ডেকে আনি। কিন্তু তাঁরা বিড়ালটিকে নামাতে পারেননি। অবশেষে সোমবার গাছ কাটার লোক দিয়ে বিড়ালটিকে নামানো হয়। আমরা সবাই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছি। রক্ষে পেয়েছি বিড়ালটি।”
The post কুকুরের তাড়া খেয়ে ৭০ ফুট উঁচু গাছে বিড়াল! দশদিন পর উদ্ধার appeared first on Sangbad Pratidin.