সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: OMR শিট কারচুপিতে গৌতম পালের কী ভূমিকা ছিল? তিনি কি আদৌ এবিষয়ে কিছু জানেন নাকি সবটাই হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যের অঙ্গুলিহেলনে? সেই সমস্ত তথ্য জানতে টানা ৫ ঘণ্টা প্রাথমিক পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। কারচুপিতে পর্ষদের কর্তা ও আধিকারিকদের কী ভূমিকা ছিল, তা গৌতমবাবুর কাছে জানার চেষ্টা করে।
যদিও সিবিআই সূত্রের খবর, তিনি সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন, যখন এই কারচুপি হয়, তখন তিনি দায়িত্বে ছিলেন না। তখন পর্ষদের দায়িত্বে ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। যদিও সিবিআইয়ের মতে, ওএমআর শিট কারচুপি সম্পর্কিত তথ্য ও নথি গৌতমবাবুর কাছে থাকা উচিত। এই ব্যাপারে তথ্য জানতেও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গৌতমবাবুর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।
[আরও পড়ুন: ক্ষিপ্ত হাতির হানায় মৃত দুই বৃদ্ধ, পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য মুখ্যমন্ত্রীর]
এর আগে ওএমআর শিট প্রস্তুতকারক সংস্থার আধিকারিক পার্থ সেন ও কর্ণধার কৌশিক মাজিকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। ধৃত ওই দুজনের বয়ান গৌতম পালের সামনে তুলে ধরা হয়। তাঁদের মুখোমুখি বসিয়েও গৌতমবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি দায়িত্বে আসার পর ওএমআর শিটে কোনও কারচুপি হয়েছিল কি না, তাও জানার চেষ্টা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ১০টা ৫১ মিনিট নাগাদ নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে যান গৌতম পাল।
এদিকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের যে অভিযোগ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ করেছিলেন, তা নিয়ে এদিন তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। কুন্তলের অভিযোগ ছিল, হেফাজতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তাঁকে নির্যাতন করছেন। সেই অভিযোগে নিম্ন আদালত তদন্তের নির্দেশ দিলেও সেই নির্দেশ নিষ্ক্রিয় করেছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায় এদিন নাকচ করে দেয় বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে নির্যাতনের যে অভিযোগ করেছেন কুন্তল, তা শুনতে হবে। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার দায়িত্ব সেই বিচারপতি অমৃতা সিংহর একক বেঞ্চের উপরই সঁপেছে ডিভিশন বেঞ্চ।
[আরও পড়ুন: ‘কোনও অশুভ শক্তি কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারবে না’, কেন্দ্রীয় এজেন্সির ‘হানা’ নিয়ে তোপ অভিষেকের]
অন্যদিকে এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সিবিআইয়ের সিটে অভিজ্ঞ সিবিআই আধিকারিক স্নেহাংশু বিশ্বাসকে নিযুক্ত করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ওই আধিকারিককে আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে কলকাতায় এসে মামলার দায়িত্ব বুঝে নিতে হবে। বর্তমানে দিল্লিতে কর্মরত ওই অফিসারকে অবিলম্বে কলকাতায় বদলি করার জন্য এদিন সিবিআই অধিকর্তাকে নির্দেশ দেন বিচারপতি। এই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই অভিজ্ঞ অফিসারকে এখান থেকে বদলি করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। একই সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে ছুটির পরে আদালতে সিবিআইকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মুখ বন্ধ খামে সিবিআইকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তদন্তের অগ্রগতির পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তদন্তকারীরা এতদিন ধরে কী কী তদন্ত করেছেন, বিস্তারিতভাবে তাও জানাতে হবে ওই রিপোর্টে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৯ নভেম্বর।