অর্ণব আইচ: সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শেখ শাহজাহানকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই। নিজাম প্যালেসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁকে। সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার আকুঞ্জপাড়ার বাড়ি, শাহজাহান মার্কেট, অফিসে দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। ইতিমধ্যে কললিস্টও হাতে পেয়েছেন আধিকারিকরা। তবে খোঁজ নেই শাহজাহানের মোবাইলের। তদন্তকারীরা হন্যে হয়ে খুঁজছে সেটি। সূত্রের খবর, মোবাইলের কথা ক্রমাগত গোপন করে চলেছেন সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা। কী কারণে এত রহস্য, মাথাচাড়া দিচ্ছে সে প্রশ্ন।
গত ৫ জানুয়ারি, সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার আকুঞ্জপাড়ায় শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। বার বার ইডি শাহজাহানের দুটি ফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করে। বেশ কিছুক্ষণ পর একটি নম্বরে ফোন ধরেন তৎকালীন তৃণমূল নেতা। ইডির কথা শুনে ফোন কেটে দেন। মুহূর্তের মধ্যে ওই এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে যায়। ইডি আধিকারিকদের বেধড়ক মারধর করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে ‘সাম্রাজ্য’ ছাড়া হয়ে যান শাহজাহান। ৫৫ দিন পর গ্রেপ্তার হন শাহজাহান। আইনি টানাপোড়েনের পর গত ৬ মার্চ শাহজাহানকে নিজেদের হেফাজতে পায় সিবিআই। ইডির উপর হামলা সংক্রান্ত নথিপত্র হস্তান্তর করেছে পুলিশ। সিবিআইয়ের হাতে আসেনি মোবাইল।
[আরও পড়ুন: ‘আমার শরীর নিয়ে খেলা করেছে!’, আদিল ফের বিয়ে করতেই গর্জে উঠলেন রাখি]
সিবিআইয়ের প্রশ্ন, তাহলে শাহজাহানের মোবাইল গেল কোথায়? তবে কি গ্রেপ্তারির সময় মোবাইল সঙ্গে ছিল না শাহজাহানের। যদিও শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, শাহজাহান আইফোন থ্রি ব্যবহার করতেন। কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিকের কাছে ওই মোবাইলটি হস্তান্তর করেছেন সন্দেশখালির সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা। তবে বর্তমানে মোবাইলটি পুলিশের কাছে রয়েছে নাকি নষ্ট করে ফেলা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
ইডি গত ৫ জানুয়ারি শাহজাহানের দুটি মোবাইল নম্বরে ফোন করেছিল। সিবিআইয়ের অনুমান, একাধিক মোবাইল ব্যবহার করতেন শাহজাহান। কললিস্ট হাতে পাওয়া গিয়েছে ঠিকই। তবে মোবাইল হাতে না পাওয়া গেলে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট কিংবা মেসেজ পুনরুদ্ধার করা কার্যত অসম্ভব। তাই মোবাইল উদ্ধারই এখন প্রধান লক্ষ্য আধিকারিকদের। মোবাইল কোথায় গেল, তা-ই যেন এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে যাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা না যায়, তাই কি ওই ঘটনার পর মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছিলেন শাহজাহান? নাকি গোপন তথ্য ফাঁসের আশঙ্কা করে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার মতো মোবাইল নিজেই নষ্ট করে ফেলেছেন সন্দেশখালির ‘বাঘ’। সূত্রের খবর, মোবাইলের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলছেন না শাহজাহানও।