রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: লোকসভা ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অতিসক্রিয়তা নিয়ে বারবার অভিযোগ তুলেছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল (TMC)। ভূপতিনগর বিস্ফোরণ মামলায় পূর্ব মেদিনীপুরের ৩ তৃণমূল নেতাকে এনআইএ (NIA) তলবের পর এবার অন্য একটি মামলায় মোট ৩০ জন তৃণমূল নেতাকে নোটিস পাঠাল সিবিআই। আর এই নোটিস ঘিরে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। জানা গিয়েছে, বিজেপি নেতা খুনের ঘটনায় গত সপ্তাহে দুদিন ধরে কাঁথি ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা INTTUC-র কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিকাশ বেজ-সহ উত্তর কাঁথি বিধানসভার ৩০জন তৃণমূল নেতাকে এবার নোটিস পাঠিয়ে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে। যদিও এই মুহূর্তে তাঁরা সকলে ভোটপ্রচারে ব্যস্ত, তাই কেউই হাজিরা দেননি বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের (WB Assembly Polls 2021)সময় কাঁথি ৩নং ব্লকের তৃণমূল নেতা নন্দ মাইতিকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল এলাকারই বাসিন্দা বিজেপির দাপুটে নেতা জন্মেজয় দলুইয়ের। ভোট পরবর্তী সময় ওই বিজেপি কর্মী জন্মেজয় দলুইকে তুলে নিয়ে গিয়ে পালটা বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরে ফাঁকা মাঠ থেকে ওই বিজেপি কর্মীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়, তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই এই খুন করেছে। মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের পক্ষ থেকে সিবিআই (CBI) তদন্তের দাবি জানানো হয়। পরবর্তীতে সেই তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে।
[আরও পড়ুন: মধুর প্রতিশোধেই জয়ের হ্যাটট্রিক, গুজরাটের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামিয়ে বাজিমাত লখনউয়ের]
আর সেই মামলার তদন্তে নেমে গত সপ্তাহে দফায় দফায় ১৩ ও ১৭ জন তৃণমূল নেতাকে তলব করে সিবিআই। এই তালিকায় রয়েছেন কাঁথির সংগঠনের একাধিক নেতা। কাঁথি ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বেজ বলেন, ''রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভোটের মুখে এই নোটিস পাঠানো হয়েছে। আমরা ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকার কথা জানিয়ে পালটা চিঠি পাঠিয়েছি। আমরা কেউ হাজিরা দিইনি।''
[আরও পড়ুন: ভোটে প্রচুর খরচ, ‘দাদা’কে ভালোবেসে ছাগল বিক্রির টাকা দিলেন গৃহবধূরা, আপ্লুত অধীর]
এর আগে শনিবার ভূপতিনগর বিস্ফোরণের ঘটনায় NIA তদন্ত করতে গিয়ে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে অভিযান চালাতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়ে। তা নিয়ে চূড়ান্ত উত্তেজনা ছড়ায়। বাধা পেরিয়ে শেষমেশ দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করে NIA. পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানব পড়ুয়া এবং দুই নেতা সুবীর মাইতি, নবকুমার পাঁজাকে দপ্তরে হাজিরার নোটিস পাঠিয়ে আজই কলকাতার অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়। আর তার পরপরই প্রকাশ্যে এল অন্য এক মামলায় ৩০ জন নেতাকে সিবিআই তলবের খবর।