অর্ণব দাস, বারাকপুর: চিটফান্ড মামলায় আরও তৎপর সিবিআই। হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি গ্রেপ্তারির পরই এবার সিবিআইয়ের নজরে তাঁর ঘনিষ্ঠরা। বীজপুরের বিধায়ক এবং কাঁচরাপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যানের পৈতৃক বাড়িতে তল্লাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের। প্রসঙ্গত, বিধায়ক এবং পুরপ্রধান সম্পর্কে দুই ভাই হন।
রবিবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ হালিশহর, কাঁচরাপাড়ার বিভিন্ন প্রান্তে সিবিআইয়ের মোট ছ’টি দল পৌঁছয়। বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বিটি রোড, পাইকপাড়া এবং দক্ষিণদাড়ির বাড়িতে হানা দেন সিবিআই আধিকারিকরা। পাইকপাড়ায় ছিলেন সুবোধের স্ত্রী রিঙ্কু। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন সিবিআই আধিকারিকরা। এলআইসি সংক্রান্ত নথি এবং পাসপোর্ট খতিয়ে দেখেন তাঁরা।
কাঁচরাপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান কমল অধিকারীর জেটিয়ার পৈতৃক বাড়িতে শুরু হয় তল্লাশি। বিধায়কের অফিসেও হানা দেন সিবিআই আধিকারিকরা। সুবোধ এবং কমল দুই ভাই। জানা গিয়েছে, বীজপুরের বিধায়কের সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল রাজু সাহানির। দীর্ঘদিনের ভাল বন্ধু দু’জনে। সে কারণেই রাজু গ্রেপ্তারির পর সুবোধ অধিকারীর বাড়িতে তল্লাশি চলছে বলেই দাবি খোদ বীজপুরের বিধায়কের। তবে তিনি কোনওভাবেই চিটফান্ড মামলার সঙ্গে যুক্ত নন বলেও দাবি তাঁর।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে হেনস্তা করছে’, অনুব্রতর পাশে দাঁড়ানোর বার্তা শতাব্দীর]
উল্লেখ্য, বর্ধমান সন্মার্গ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন নামে ওই চিটফান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ দায়ের হয় ২০১৪ সালে। কুলটি থানায় অভিযোগ জমা পড়েছিল। কোটি কোটি টাকা তছরূপের ঘটনায় ২০১৮ সালে সিবিআই তদন্ত শুরু করে। চার্জশিটও জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত বছর ১২ ডিসেম্বর তৃণমূল নেতা তথা বর্ধমান পুরসভার পুরপ্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় গ্রেপ্তারও হন। যদিও বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত। এই মামলাতেই এবার সিবিআইয়ের জালে রাজু।
শুক্রবার বাড়ি থেকে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা, আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ উদ্ধারের পর রাজু সাহানিকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। রাতেই তাঁকে কলকাতায় নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয়। আসানসোলের ফৌজদারি আদালতে তোলা হয় তাঁকে। ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। যদিও গ্রেপ্তারির পরেও রাজুর দাবি, তিনি কোনওভাবেই চিটফান্ডের সঙ্গে আমি যুক্ত নন।
দাপুটে সিপিএম নেতা তথা কাউন্সিলর লক্ষ্মণ সাহানির ছেলে রাজু। হালিশহরের লালকুঠিতে তাঁর পৈতৃক বাড়ি। লোহার ছাঁট এবং পাটের ব্যবসা করতেন। তবে মাত্র কয়েক বছরেই নাকি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যান রাজু। হালিশহরে গঙ্গার ধারে হাইনেস্ট গেস্ট হাউস, নিউটাউনে ফ্ল্যাট এবং সিটি সেন্টারের কাছে বাড়িও রয়েছে। কীভাবে অল্প সময়ে বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন রাজু, তা খতিয়ে দেখছেন সিবিআই আধিকারিকরা।