ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: শিলিগুড়ির (Siliguri) সাফারি পার্কে দুই বাঘ শিশুর মৃত্যু নজর ঘুরিয়ে দিয়েছে। তার থেকেই বনদপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমস্ত চিড়িয়াখানায় বাঘ-ভাল্লুকের মতো স্তন্যপায়ীর এনক্লোজারের ভিতরে সিসিটিভি (CCTV) বসানো হবে। দর্শক না থাকলে অবসর সময় বিশেষ করে রাতে এনক্লোজারের (Encloser) ভিতর পশুদের আচার-আচরণ কেমন, সেসব বুঝতেই এই সিদ্ধান্ত। সদ্যোজাতর ক্ষেত্রে অনেক সময় মায়ের শরীর দুর্বল থাকে। শিশুর দেখভাল ঠিকমতো করতে পারে না। অনেক সময় মা নিজেই তাদের সন্তানদের মধ্যে কাকে বিশেষ নজর দেবে তা বেছে নেয়। এসব ক্ষেত্রে অন্য শিশুটি দুর্বল হয়ে মারা যায়। বনদপ্তর সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির সাফারি পার্কের প্রথম ব্যাঘ্রশিশুটির মৃত্যুও এভাবেই। এমন পরিস্থিতি আগে থেকে আঁচ করতেই এনক্লোজারে সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত।
সাফারি পার্কের বাঘ কিক্কা সাদা চামড়ার (White)। তবে তার দু’টি শিশুই হয়েছিল হলদে ডোরাকাটা। একটি পূর্ণবয়স্ক হলদে ডোরাকাটার সঙ্গে মিলনেই তাদের অমন সন্তান। শিশু দু’টির মৃত্যুর মূল কারণ হিসাবে অসুস্থতাই জানানো হয়েছে। তবে তার সূত্রপাত তাদের মায়ের থেকেই বলে জানাচ্ছে বনদপ্তর। জানা গিয়েছে, কিক্কার শরীরে টিবি (Tuberculosis) বাসা বেঁধেছে। পিছনের দুই পায়ে জন্মগত সমস্যা। উলটোদিকে ভাঁজ হয়। তাতে প্রথম থেকেই কোমরের নিচের অংশে জোর কম।
[আরও পডু়ন: জাতীয় সংগীতের মতো রাজ্যের জন্য তৈরি হোক ‘রাজ্য সংগীত’, প্রস্তাব স্পিকারের]
এই পরিস্থিতিতে তার চিকিৎসা করতে গিয়ে কিছু কড়া ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়েছিল। তাতে প্রাথমিক লাভ হলেও হাঁটুর ক্ষয় গিয়েছে বেড়ে। এই পরিস্থিতিতে তুলনামূলক কম বয়সে তার সন্তানধারণ এবং দুই শিশুর জন্ম। স্বাভাবিকভাবেই অসুস্থ শরীর খুব বেশি ধকল সইতে পারেনি। যার প্রত্যক্ষ প্রভাবে শিশুদের স্তন্যপান করানোর ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়। যে শিশুটি প্রথম মারা যায়, সেটি একেবারেই মায়ের যত্ন পায়নি। দ্বিতীয় শিশুটির মৃত্যুর কারণও মর্মান্তিক। কিক্কা দ্বিতীয় শিশুটিকে একপাশে রেখে উঠে দাঁড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু শরীরের অবস্থার জন্য তা সম্ভব না হওয়ায় শিশুটির উপরই ওই শরীর নিয়ে পড়ে যায় বলে খবর।
[আরও পডু়ন: ‘পালিয়ে যাইনি, ট্রেকিংয়ে ছিলাম’, যাদবপুর কাণ্ডে অন্যতম সন্দেহভাজন অরিত্রর আত্মপ্রকাশ!]
এই মুহূর্তে সাফারি পার্কে আরও ৪টি প্রায় পূর্ণবয়স্ক বাঘ রয়েছে। আরও অন্তত ১২টি বাঘ আনার কথা। তার মধ্যে ৮টি আসার কথা মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh)থেকে। বাকি ৪টি ঝাড়খণ্ড থেকে। এছাড়া ৪টি সাইবেরিয়ান বাঘ আনার কথা রয়েছে দার্জিলিং চিড়িয়াখানার জন্য। এদের কথা মাথায় রেখেই নজরদারি বাড়াতে, বিশেষ করে রাতে নজর বাড়াতে এনক্লোজারের বাইরে উলটোদিকে নাইট ভিশন সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।