নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সুখবর। দ্রুত ১০০ দিনের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। বুধবার রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে ফোন করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দুজনের মধ্যে পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে আলোচনা হয়। তারপরই একশো দিনের বকেয়া টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সূত্রের খবর, ব্যক্তিগতভাবে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। এরপরই বকেয়া মেটানোর আশ্বাস দিল কেন্দ্র।
তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের এই ভূমিকাকে কৌশল বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর কথায়, “অর্থবর্ষের শেষের দিকে এসে টাকা দিলে কাজ কীভাবে হবে? টেন্ডার করতে সময় লাগে না? ডিপিআর করতে সময় লাগে না? অর্থবর্ষের শেষে টাকা পেয়ে কাজ করতে না পারলে তো ওরা বলবে কাজ হয়নি।”
১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে টানাপোড়েন তুঙ্গে। রাজ্যের অভিযোগ, কেন্দ্র ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা দিচ্ছে না। ফলে প্রকল্পের অধীনে যারা কাজ করছিলেন তাঁদের পাওনাও বকেয়া রয়েছে। পালটা কেন্দ্র দাবি করেছে, রাজ্যে খরচের হিসেব দেয়নি। তাই মেলেনি টাকা। প্রকল্পের কাজে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ কেন্দ্রের।
[আরও পড়ুন: দিল্লিতে দেড় দশকের বিজেপি যুগের অবসান, পুরনিগমে ক্ষমতা দখল করল AAP]
গত ৫ মাস ধরে ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে রেখেছে কেন্দ্র। ফলে একশো দিনের শ্রমিকদের পেটে টান পড়ছে। সম্প্রতি এই ইস্যুতে একাধিকবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, বঞ্চনা নিয়ে দু’দিন প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করেছে রাজ্য তৃণমূল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে প্রাপ্যর দাবি জানিয়ে এসেছেন। তাতেও কাজ হয়নি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতে বাংলার প্রাপ্য নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। লিখিতভাবে হিসেব তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁর হাতে। তারপরেও কোনও অর্থ দেওয়া হয়নি বাংলাকে।
কেন্দ্র সূত্রে খবর, ১০০ দিনের কাজের খাতে ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে বাংলাকে দেওয়া ১১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকার কিছু বেশি। পরের অর্থবর্ষে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কমে। ২০২২-২০২৩ অর্থবর্ষে এই বরাদ্দ দাঁড়ায় ৭ হাজার ৫০৭ হাজার কোটি টাকার সামান্য বেশি। অথচ চলতি অর্থবর্ষের ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাংলার খাতে এক টাকাও ব্যয় করেনি কেন্দ্র। এদিকে কেন্দ্রের উপর ক্রমাগত চাপ তৈরি করছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতেই কাজ হল। দ্রুত বকেয় মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিল কেন্দ্র।