নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: তৃণমূল-সহ বিরোধী শিবির এতদিন যা দাবি করছিল, সংসদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) করা প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রের দেওয়া পরিসংখ্যানে কার্যত সেটাই প্রমাণিত হল। সংসদে অর্থমন্ত্রক জানাল, পেট্রল-ডিজেলে (Petrol-Diesel) শুল্ক বাবদ কেন্দ্রের রোজগার ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের তুলনায় দেড়গুণেরও বেশি বেড়েছে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে।
সংসদে লিখিতভাবে প্রশ্ন করে তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চেয়েছিলেন ২০২০-২১ অর্থবর্ষে পেট্রোপণ্যের রাজস্ব বাবদ কত টাকা আয় করেছে কেন্দ্র? একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন ছিল, চলতি অর্থবর্ষে পেট্রোপণ্যে কত টাকা কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে সরকার? অভিষেকের এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বেশ অস্বস্তিতেই পড়তে হয়েছে কেন্দ্রকে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক (Ministry of Finance) জানিয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে পেট্রোপণ্যের কর বাবদ কেন্দ্র আদায় করেছে ৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে এই করের অঙ্ক ছিল ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ, যে বছর পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছিল, সে বছরই কেন্দ্র পেট্রোপণ্যের শুল্ক বাবদ প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা বাড়তি আয় করেছে।
[আরও পড়ুন: সংসদে বিরোধী ঐক্যে চিড় ধরানোর চেষ্টা! কেন্দ্রের আলোচনার প্রস্তাব খারিজ পাঁচ বিরোধী দলের]
বস্তুত, করোনার (Coronavirus) সময় অন্যান্য ক্ষেত্রে রোজগার কমে যাওয়ায় পেট্রল ও ডিজেলের উপর বাড়তি শুল্ক বসায় কেন্দ্র। আসলে মোদি (Narendra Modi) সরকার চাইছিল করোনার সময় অন্যান্য খাতে যে রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছিল এবং বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পতে যা খরচ হচ্ছিল, তা একসঙ্গে পুষিয়ে নিতে। সেকারণেই আগের তুলনায় অন্তশুল্ক বাড়িয়ে কয়েকগুণ করা হয়। সেই সঙ্গে বসানো হয়েছিল বাড়তি সেস (Cess)। যার ফলে সাধারণ মানুষের পকেট কাটা গেলেও ঘাটতি পূরণ হচ্ছিল কেন্দ্রীয় রাজকোষের। কিছুদিন আগে কেন্দ্র শুল্ক কমানোর আগে পর্যন্ত পেট্রল ডিজেলে কর বাবদ কেন্দ্র পাচ্ছিল ৬৩ শতাংশ, রাজ্য পাচ্ছিল ৩৭ শতাংশ।
[আরও পড়ুন: Stock market: ওমিক্রনের চোখরাঙানিতে শেয়ার বাজারে ধস, একধাক্কায় বিরাট পতন সেনসেক্স, নিফটিতে]
সদ্যই পেট্রল ও ডিজেলের শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। একে একে কেন্দ্রের দেখানো পথ অনুসরণ করেছে বিজেপি শাসিত সবকটি রাজ্য। বিজেপির (BJP) জোটসঙ্গীরাও পেট্রপণ্যের উপর ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে। যদিও, অধিকাংশ বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির অধিকাংশই ভ্যাট কমাতে পারেনি। যা নিয়ে বিজেপি বিরোধীদের আক্রমণও করেছে। বিরোধীরা পালটা আয়না দেখাচ্ছে সরকারকে। তাঁদের দাবি, পেট্রল-ডিজেল থেকে বিপুল আয় করছে সরকার। সেখান থেকে সামান্য কমলেও রাজকোষে তেমন প্রভাব পড়বে না।