সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় লোকসভা ২০২২-’২৩ সালে সাধারণ বাজেট (Budget) পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। একদিকে কোভিড-১৯ সঙ্কটের দরুণ সার্বিক অর্থনীতির বিধ্বস্ত অবস্থা, সবচেয়ে বেশি উদ্বেগে রাখা বেকারের সংখ্যা আর অন্যদিকে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন। কাজেই নির্মলার সামনে এখন অনেকগুলি চ্যালেঞ্জ। সব শ্রেণির মানুষকে সন্তুষ্ট করার চাইতেও, তার কাছে যেটা এই সময় সবচেয়ে জরুরি তা হল বেলাইন অর্থনীতিকে দ্রুত ট্র্যাকে ফেরানো। এর জন্য যা যা করণীয় তার সবগুলিই সীতারমণ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটা অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন, মানুষের হাতে অতিরিক্ত নগদ থাকাটা জরুরি, যাতে কেনার আগ্রহটা বাড়তে পারে।
[আরও পড়ুন: পেগাসাস ইস্যুতে কেন্দ্রকে চাপ তৃণমূলের, লোকসভায় নোটিস সৌগত রায়ের]
করোনাকালে পরিযায়ী শ্রমিক সমস্যাটা প্রকাশে্য এসে গিয়েছে। তাদের সমস্যার দিকটি এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। গতবারের বাজেটে ভেবেচিন্তে বিশেষ কিছু করার সময় পায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এ বার কিন্তু সেই সুযোগটা রয়েছে। সরকারের হাতে রয়েছে ২৩ কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের আধার-যুক্ত একটি বিশাল তথ্যভাণ্ডার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রামাঞ্চলে ১০০ দিনের কাজ বা মনরেগার মতো কোনও প্রকল্প শহরের জন্যও সরকারের ভাবা দরকার। এখন ই-শ্রম পোর্টালের মাধ্যমে শহুরে কর্মহীনদের ব্যাংকের মাধ্যমে যে নগদ প্রদান হয়ে থাকে, সেই খয়রাতি দীর্ঘদিন চলতে পারে না।
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক কেশব মিশ্র বলেন, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপটি অবশ্যই ক্ষমতাসীন বিজেপিকে প্রচুর রাজনৈতিক লাভ দেবে। কারণ ২০২০ সালে করোনা লকডাউনের সময় কাজ হারিয়ে বাড়ি ফেরাদের বেশিরভাগই ছিলেন বিহার ও উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। সরকারী তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে দেশজুড়ে কার্যকর হওয়া লকডাউনের পর ১ কোটির বেশি পরিযায়ী শ্রমিককে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল। এই প্রত্যাবর্তন দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলেছিল। বেশিরভাগ শ্রমিক ছিল উত্তরপ্রদেশ (৩২,৪৯,৬৩৮), বিহার (১৫,০০,৬১২) এবং পশ্চিমবঙ্গের (১৩,৮৪,৬৩৯)।
সূত্রের খবর, সরকার সম্ভবত আসন্ন বাজেটে ইলেকট্রনিক্স এবং মোবাইল ফোনের সরঞ্জামের উপর শুল্ক পুনর্বিন্যাস করতে পারে। পুরো বিষয়টির অগ্রগতির সঙ্গে যুক্ত দুই আধিকারিক এমনটাই দাবি করেছেন বলে একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। বস্তুত, পরিবর্তনগুলির লক্ষ্য স্থানীয় উত্পাদনকে উত্সাহিত করা এবং উপাদানগুলির স্থানীয় উত্স বৃদ্ধি করা। শুল্ক পদ্ধতির আরও সরলীকরণ নিয়েও আলোচনা চলছে বলে জানা গিয়েছে। সরকার স্থানীয় উত্পাদনকে উত্সাহিত করার জন্য অডিও সরঞ্জাম এবং স্মার্টওয়াচ এবং স্মার্ট ব্যান্ডের যন্ত্রাংশগুলির আমদানি শুল্ক হ্রাস করার কথা বিবেচনা করছে। এতে সরকারে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগে দেশের বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম উৎপাদন বাড়ানো গেলে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে।
আসন্ন বাজেটে তামাকজাত পণ্যের উপর কর বাড়ানো নিয়ে জল্পনার মধ্যে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) অনুমোদিত স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ (এসজেএম) -এর অর্থনৈতিক শাখা বিড়ির শুল্ক কমানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এসজেএম-এর সহ-আহ্বায়ক অশ্বনী মহাজন দাবি করেন যে বিড়িকেও সিগারেট এবং অন্যান্য তামাকজাত পণ্য আইন-এর প্রস্তাবিত সংশোধনীর আওতার বাইরে রাখা হোক, কারণ বিড়ির উপর কর বৃদ্ধির ফলে মানুষের জীবিকা কঠিন হবে। এই শিল্পে যুক্ত লক্ষ লক্ষ শ্রমিককে নকশালদের দিকেও ঠেলে দিতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেছেন।