প্রণব সরকার, আগরতলা: ত্রিপুরায় স্থায়ী শান্তিস্থাপনে বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের। নয়াদিল্লিতে সে রাজ্যের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করল কেন্দ্রের মোদি সরকার। এটিটিএফ ও এনএলএফটি নামের ওই দুই জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেন কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রসচিব, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা, এবং মুখ্যসচিব জে কে সিনহা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পৌরহিত্যে এই শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ বিপ্লব দেব, মহারাজ প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মন-সহ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পদস্থ আধিকারিকরা। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর শাহ বলেন, "এই চুক্তির ফলে গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্থায়ী শান্তির পথ সুগম হবে। ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্বে দশটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। শুধু ত্রিপুরাতেই হয়েছে তিনটি শান্তিচুক্তি।" ত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য এই চুক্তি একটি মাইলফলক বলেও দাবি করেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: বক্তব্য শোনা হয়নি হাই কোর্টে, এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ সন্দীপ]
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৩৫ বছর জঙ্গি কার্যকলাপ এবং সন্ত্রাসবাদ সমস্যায় ভুগেছে ত্রিপুরা। আটের দশকে এনএলএফটির তীব্র সন্ত্রাসে কার্যত অসহায় হয়ে পড়ে রাজ্যবাসী। এক সময় ত্রিপুরার জঙ্গি সন্ত্রাস চালিয়েছে টিএনভি গোষ্ঠী। টিএনভি প্রধান বিজয় রঙ্খলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। যা 'বিজয় রাজীব' চুক্তি হিসেবে খ্যত।
[আরও পড়ুন: ১৫-১৬ মাসেও ফেরেনি শান্তি, নীরব দর্শক কেন্দ্রীয় বাহিনী ! তোপ মণিপুরের বিজেপি বিধায়কের]
ত্রিপুরার জঙ্গি আন্দোলনের ইতিহাস দীর্ঘ। তবে ইদানিং সেই সন্ত্রাস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। আগের থেকে দুর্বল এটিটিএফ ও এনএলএফটি। অমিত শাহ বলেছেন, "উত্তর-পূর্বে এ পর্যন্ত মোট ১০ হাজার জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছেন।" ইতিমধ্যে এটিটিএফের প্রাক্তন প্রধান রঞ্জিত দেববর্মা আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। তিনি তিপ্রামথা দলের বিধায়ক হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছেন। এদিনের শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের সময় তিনিও উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তির ফলে স্থায়ী শান্তির পথ সুগম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।