সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলবার বাজারে এসেছে আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আত্মজীবনী ‘A Promised Land’। সেখানেই লাদেন হত্যা নিয়ে মার্কিন সরকারের প্রস্তুতি ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আল কায়দা যোগ তুলে ধরেছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট।
[আরও পড়ুন: ‘রামায়ণ-মহাভারত শুনে বড় হয়েছি’, বইয়ে ভারতের প্রতি আগ্রহের কথা লিখলেন ওবামা]
নিজের বইয়ে ওবামা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে সামরিক প্রয়োজনে পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্যতা বজায় রাখলেও, কখনওই ইসলামাবাদকে বিশ্বাস করেনি ওয়াশিংটন। আত্মজীবনীতে ওবামা জানিয়েছেন, তৎকালীন আল কায়দা প্রধান তথা টুইন টাওয়ার হামলার প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ওসামা বিন লাদেনকে খতম করার অভিযান বা ‘Operation Neptune Spear’-এর প্রস্তুতির কথা পাকিস্তানের কাছে গোপন রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এর কারণ, পাক সেনার একাংশ ও আইএসআইয়ের সঙ্গে যোগ রয়েছে আল কায়দার। ফলে এই অভিযানে পাকিস্তানকে শামিল করলে উদ্দেশ্যপূরণ সম্ভব হত না।
ওবামা জানিয়েছেন, মার্কিন নেভি সিলের হাতে ওসামা খতম হওয়ার পর তৎকালীন পাক সেনাপ্রধান আসফাক পারভেজ কিয়ানিকে ফোন করেছিলেন প্রাক্তন মার্কিন সেনাপ্রধান মাইক মুলেন। সে খবর শোনার পর বেশ শান্ত ছিলেন কিয়ানি। ওবামার কথায়, “লাদেনকে খতমের কথা বিস্তারিতভাবে মুলেনকে প্রকাশ্যে আনতে অনুরোধ করেছিলেন কিয়ানি। এতে পাকিস্তানি জনসাধারণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রশমন করতে সুবিধা হবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।” এছাড়া, লাদেনের মৃত্যুসংবাদ শুনে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জরদারি বলেছিলেন, ‘খুব ভাল খবর’। শুধু তাই নয়, জঙ্গিদের হাতে কীভাবে তাঁর স্ত্রী বেনজির ভুট্টো খুন হয়েছিলেন, তা ওবামাকে জানিয়েছিলেন আবেগাপ্লুত জারদারি। ওবামা স্বীকার করেছেন, জারদারির এই প্রতিক্রিয়ায় তিনি কিছুটা অবাকই হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, পাক সেনার সঙ্গে তালিবান-সহ প্রায় সমস্ত জেহাদি সংগঠনগুলির যোগ রয়েছে তা সবার জানা। ৯/১১ হামলার পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমেরিকার লড়াইয়ে একপ্রকার ভয় দেখিয়ে ইসলামাবাদকে শামিল করেছিল জর্জ বুশ প্রশাসন। আফগানিস্তান থেকে তালিবানকে উৎখাত করতে আমেরিকার কৌশলগত প্রয়োজন মেটাতে বাধ্য হয়েছিলেন পাকিস্তানের সেনাশাসক পারভেজ মুশারফ। কিন্তু দেশটিকে যে কখনও বিশ্বাস করেনি আমেরিকা তা ফের স্পষ্ট করে দিলেন ওবামা।