অভিরূপ দাস: ফের রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা! এবার এই অসহিষ্ণুতার নির্দশন দেখা গেল কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে। শনিবার মাসিক অধিবেশন চলাকালীন আচমকাই অসুস্থ হন ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। কাশির দমকে বসে পড়েন মাথা নিচু করে। এমতাবস্থায় বিষয়টি নজরে আসে কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়ের। তিনি প্রশ্ন করেন, “কী হয়েছে? অসুস্থতা বোধ করছ?”
কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না কাউন্সিলর পাপিয়া সিং। মাথা নেড়ে কোনওরকমে হ্যাঁ বলেন। তাঁর পাশেই বসেছিলেন ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবলীনা বিশ্বাস। মালা রায় তাঁকে অনুরোধ করেন, ওঁকে বাইরে নিয়ে যাও দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা কর। শনিবার করে উপোস করেন ওই কাউন্সিলর। সে বিষয়টি জানতেন মালা রায়। তা জেনেই তিনি বলেন, উপোস করেছ নিশ্চয়ই। শরীরের যত্ন নিও।
[আরও পড়ুন: ‘ছিঃ! এত পচা লোকজন তৃণমূল করে! কে ঢোকাল দলে?’, কুন্তল ইস্যুতে প্রশ্ন মদনের]
চেয়ারপার্সনের এমন মন্তব্যের পরই হাসতে শুরু করেন সজল ঘোষ। বিজেপি কাউন্সিলর বলে বসেন, “এখন তো সারা পশ্চিমবঙ্গই উপোস করে আছে।” বিজেপি কাউন্সিলরের এমন উপহাসের সময়, অসুস্থ তৃণমূল কাউন্সিলরকে বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন সতীর্থ কাউন্সিলররা। সকলেই উদ্বিগ্ন। এমন পরিবেশে মশকরা শুনে ক্ষুব্ধ মালা রায় বলেন, ‘‘উপহাস করবেন না। অসুস্থ মানুষকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতে নেই।’’ কক্ষে উপস্থিত অন্যান্য তৃণমূল কাউন্সিলররাও এর বিরোধিতা করেন।
তড়িঘড়ি চেয়ারপার্সনের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় অসুস্থ কাউন্সিলরকে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা চিকিৎসক মীনাক্ষি গঙ্গোপাধ্যায় অসুস্থ কাউন্সিলরের প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রচন্ড কাশি হচ্ছিল। প্রেশার মাপা হয়। তখনকার মতো গরম জল খাওয়ানো হয় তাঁকে। বিজেপি কাউন্সিলরের উপহাস নিয়ে ক্ষুব্ধ তিনি। ডা. মীনাক্ষি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হতেই পারে। কিন্তু এ ধরণের অমানবিক আচরণের প্রতিবাদ করছি। বিরোধী দলের প্রতি আমরা কোনও বৈরিতার মনোভাব রাখি না। কাল বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ অসুস্থ হলেও আমি তাঁর চিকিৎসা করব।”