সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জঙ্গলমহলে ভোট মিটতেই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (NIA) হাতে গ্রেপ্তার হলেন তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো (Chhatradhar Mahato)। রবিবার ভোরে ঝাড়গ্রামের লালগড়ের বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে এনআইএ’র ৪০ সদস্যের একটি দল। ২০০৯ সালে লালগড়ের সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুনের ঘটনায় এদিন ছত্রধরকে গ্রেপ্তারির পর কলকাতায় আনা হচ্ছে। আজই পেশ করা হবে কলকাতায় এনআইএ’র বিশেষ আদালতে। জাতীয় তদন্তকারী দলের অভিযোগ, মামলার তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না প্রাক্তন মাওবাদী নেতা। তাই আদালতের নির্দেশে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আশঙ্কা ছিলই, পুরনো মামলাগুলিতে এনআইএ’র তদন্তে সহযোগিতা না করলে গ্রেপ্তার হতে পারেন ঝাড়গ্রামে (Jhargram)জনসাধারণ কমিটির প্রাক্তন নেতা তথা বর্তমানে তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো। প্রথম দফার ভোট মিটে যেতেই সেই আশঙ্কা সত্যি হল। এনআইএ সূত্রে খবর, চলতি মাসের ১৬, ১৮ এবং ২২ তারিখ ছত্রধর মাহাতোকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল। তিনি হাজিরা দেননি। ফের ২৬ তারিখ ডেকে পাঠানো হয়। ওইদিন টানা প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জেরা করেন এনআইএ তদন্তকারীরা। কিন্তু রবিবার ভোরে আচমকাই তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে প্রায় ৪০ জনের একটি দল হাজির হয় লালগড়ে, ছত্রধরের বাড়িতে। সেখান থেকে সরাসরি গ্রেপ্তার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা।
[আরও পড়ুন: দুর্নীতিতে যুক্ত শীর্ষ নেতৃত্ব, বঙ্গে প্রার্থী ঘোষণার পরই JDU রাজ্য সভাপতি পদে ইস্তফা অশোকের]
এই মুহূর্তে ছত্রধর মূলত দুটি মামলায় অভিযুক্ত – ২০০৯ সালে রাজধানী এক্সপ্রেসে নাশকতার চেষ্টা এবং ওই বছরেই সালে লালগড়ে সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো হত্যাকাণ্ড। দুই মামলাতেই দীর্ঘ সময় পর তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। এরপর ছাত্রধরকে কয়েক দফায় জেরাও করেন তদন্তকারীরা। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে বিশেষ আদালতের দ্বারস্থ হয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত ২২ অক্টোবর এনআইএ-এর বিশেষ আদালত নির্দেশ দেয়, যেহেতু ঝাড়গ্রাম নিম্ন আদালত এই মামলায় ছত্রধর-সহ অন্য অভিযুক্তদের জামিন মঞ্জুর করেছিল, তাই তিনি এবং বাকি পাঁচ অভিযুক্তের জামিন খারিজের জন্য এনআইএ-কে সেখানেই আবেদন করতে হবে।
[আরও পড়ুন: ভোট প্রচারে এবার শাহরুখ খানের ছবির দৃশ্য মনে করাল বামেরা, দেখুন ভিডিও]
এরপরই ছত্রধরকে হেফাজতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ হয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এনআইএ’র সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তবে এরপরও রেহাই মিলল না ছত্রধর মাহাতোর। দীর্ঘদিন পর রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরে গণতন্ত্রের উৎসবে যোগদানের পরই তাঁকে পুরনো জীবনের কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রেপ্তার হতে হল।