সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বড় দুর্ঘটনা গুড়াপে(Gurap)। সেখানকার কংসারিপুর মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি টোটোতে ধাক্কা মারে একটি ডাম্পার। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে শিশু-সহ ৭ জনের। এই দুর্ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। বিক্ষোভ দেখান সেখানকার বাসিন্দারা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে গুড়াপের কংসারিপুর মোড়ের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছে। ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বর্ধমানমুখী একটি ডাম্পার ধাক্কা মারে টোটোটিকে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, যাত্রী সমেত টোটোটি ঢুকে যায় ডাম্পারের নিচে। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন স্থানীয় মানুষজন। খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছয় পুলিশ। ডাম্পারের নিচে থেকে যাত্রীদের উদ্ধারে হাত লাগান স্থানীয়রাও। অচৈতন্য অবস্থায় ডাম্পারের নিচ থেকে মোট ৭ জনকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা তখনই ৫ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে মৃত্যু হয় টোটো চালক-সহ আরও ১ জনের। মৃতদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। দুর্ঘটনার পরই গ্রেপ্তার করা হয় ওই ডাম্পার চালককে। এনিয়ে হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সুপার কামনাশিষ সেন জানিয়েছেন, “ডাম্পার চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ডাম্পারে কোনও খালাসি ছিল না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ জানিয়েছেন।”
[আরও পড়ুন: CAA চালু হতেই খোল-করতাল নিয়ে নাচ, মঙ্গলে মমতার বার্তায় মন বদলাবে মতুয়াদের?]
এই দুর্ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাস্তায় পাশেই কংসারিপুর মোড়ে একটি টোটো ছিল। টোটোয় একাধিক যাত্রী ছিলেন। হঠাৎ করেই একটি ডাম্পার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই টোটোতে ধাক্কা মারে। টোটোর উপর উঠে যায় গাড়িটি। এনিয়ে সেখানকার বাসিন্দা মহম্মদ হানিফ বলেন, “টোটোতে চালক-সহ ৭ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একটি শিশু তার মা বাবা এবং এক কলেজ ছাত্রীও ছিলেন। কেউ ডাক্তার দেখাতে কেউ নিজের কাজে যাচ্ছিলেন। বেপরোয়া ডাম্পার টোটোকে পিষে দেয়।” ঘটনার খবর পেয়ে বর্ধমান হাসপাতালে আসেন বর্ধমান থানার আই সি দীবেন্দু দাস। সেখানেই ময়নাতদন্ত করা হবে মৃতদের।
এদিন রামেশ্বরপুর থেকে যাত্রী নিয়ে আসছিলেন টোটো চালক সৌমেন ঘোষ (২৩)। তাঁর বাড়ি গুড়াপ থানার ভোতর এলাকায়। টোটোতে ছিলেন বিদ্যুৎ বেরা (২৯), প্রীতি বেরা (২২) ও তাঁদের বছর দুয়েকের ছেলে বিহান বেরা। তাঁরা হুগলির দাদপুর থানার বক্কেশর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। এছাড়াও টোটোতে ছিলেন আরেক দম্পতি রামপ্রসাদ দাস (৬২) ও নূপুর দাস ( ৫০)। তাঁদের বাড়ি পান্ডুয়ার রামেশ্বরপুরে। এই ঘটনায় সকলেই প্রাণ হারিয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে সেসময় টোটোতে থাকা বছর কুড়ির তরুণী সৃজা ভট্টাচার্য্যেরও। তাঁর বাড়ি হুগলির ভাসতারা এলাকায়।
ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার জানিয়েছেন, ওই ডাম্পারের চালককে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ডাম্পার চালক কেন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এভাবে ধাক্কা মারলেন সে ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে। চালক মত্ত অবস্থায় ছিলেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণে কংসারিপুর মোড়ে কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।