নিরুফা খাতুন: আনন্দপুরে মহিলা খুনে অভিযুক্তের গ্রেপ্তারির পর তাঁর নিখোঁজ নাতির দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মঙ্গলবার থেকে নিখোঁজ থাকার পর বৃহস্পতিবার বামনঘাটা খাল থেকে শিশুটির দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ধৃতকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এদিন সকাল থেকেই বাসন্তি হাইওয়ের ধারে বামনঘাটা খালে বোট নামিয়ে তল্লাশি শুরু করে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয মোকাবিলা বাহিনী। অবশেষে সেখান থেকেই উদ্ধার শিশুর দেহ। বুধবার সকালে আনন্দপুর এলাকায় ঝোপের ধারে এক মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তবে নিখোঁজ ছিল তাঁর চার বছরের নাতি। বুধবার রাতেই খুনে অভিযুক্ত পরিচিত এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
নারকেলডাঙায় পরিবারে সঙ্গে থাকতেন মৃত রেহানা পারভিন। তিলজলায় তাঁর একটি আবাসন রয়েছে। সেখানে ভাড়াটিয়ারা থাকেন। প্রতি মাসে ভাড়া নিতে তিলজলায় যান বাড়ি মালিক। ওই বহুতলের নিচে ভাড়া থাকতেন ভিকি সাউ নামে এক যুবক। তাঁর একটি মারতি ওমনি গাড়ি রয়েছে। ভাড়াটিয়াদের কাছে ঘর ভাড়া নিতে ওই যুবকের গাড়ি করেই যেতেন পারভিন। ঘটনার দিন সঙ্গে যায় তাঁর নাতিও।
[আরও পড়ুন: গোপন তথ্য জেনে ফেলায় মেয়েকে খুন! সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক আর জি কর নির্যাতিতার মা]
পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুর তিনটের সময় নারকেলডাঙা ওই যুবককে গাড়ি নিয়ে আসতেন বলেন বাড়ি মালিক। নাতনিকে সঙ্গে নিয়ে গাড়িতে চেপে চলে যান তিনি। সাধারণত সন্ধে সাতটার মধ্যে তিনি বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু ১১টা বেজে গেলেও বাড়িতে ফেরেননি। তখন মেয়ে তাঁর মাকে ফোন করেন। মায়ের সঙ্গে কথাও হয়। গাড়ি করে বাড়ি ফিরছে বলে জানান। কিন্তু ফেরেনি। পুলিশ জানিয়েছে, মা বাড়িতে না ফেরায় ওই রাতেই তিলজলায় যান মেয়ে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন অনেক আগেই ভিকির সঙ্গে গাড়ি করে বেড়িয়ে গিয়েছেন। ভিকি তিলজলায় ঘর ভাড়া নিলেও তালতলায় স্ত্রী পরিবারকে নিয়ে থাকেন। রাতেই তিলজলা থেকে তাঁরা ভিকির তালতলার বাড়িতে আসে। ভিকি সেখানে ছিল।
[আরও পড়ুন: ‘কাকে বাঁচাতে চাইছেন সন্দীপ? অভিসন্ধি কী?’, প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের]
পুলিশ জানিয়েছে, ভিকিকে মহিলার কথা জিজ্ঞেস করতে বলে বাড়ির কাছে নামিয়ে দিয়েছেন। তার বক্তব্যে সন্দেহ হতেই ভিকিকে আটক করে নারকেলডাঙা থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তখনও সে তার দোষ কবুল করেনি। এর মধ্যে বুধবার সকালে আনন্দপুর নির্জন রাস্তার পাশে ঝোপে মহিলার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। রেহানার পরিবার দেহটি শনাক্ত করে। এর পর অভিযুক্তকে লালবাজার এনে জেরা করতেই তদন্তকারীদের কাছে অপরাধ স্বীকার করে নেয়। লালবাজার জানিয়েছে, গাড়ির ভিতরে ছুরি দিয়ে মহিলার গলা কেটে খুন করা হয়। ওই গাড়িতে তার এক নাবালক সহকারী ছিল। তাকে সঙ্গে নিয়ে দেহটি ঝোপের ধারে ফেলে দিয়ে যায়। গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এবার উদ্ধার হল নিখোঁজ শিশুপুত্রের দেহ। দোষীর শাস্তির দাবি ফুঁসছে পরিবার।