স্টাফ রিপোর্টার: ভরা গ্রীষ্মে বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে মাস্ক ব্যবহারের নিদান দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, অ্যাডিনো সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে মাস্ক সুরক্ষাকবচ হতেই পারে। গ্রীষ্মের তীব্র জ্বলুনির সঙ্গে বাড়ছে বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণ। কলকাতা তো বটেই, গোটা দক্ষিণবঙ্গের শিশুদের সংক্রমণে ত্রস্ত চিকিৎসক। শঙ্কিত তাদের পরিবার। মূলত ছমাস থেকে বারো বছরের মধ্যে সংক্রমণ দেখা যায়। প্রথমে জ্বর-সর্দি। কদিন পরে টানা বেদম কাশি। ফল-একই শরীরে একসঙ্গে বাসা বেঁধেছে ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া আর অ্যাডিনো।
এমন অন্তত কুড়িটি শিশু বি সি রায় শিশু হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি। পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথেও নিয়ম করে এমন ত্রিফলা সংক্রমণ নিয়ে বাচ্চারা ভর্তি। কয়েকটি বাচ্চা ভেন্টিলেশনে চিকিৎসাধীন। এখানেই শেষ নয়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালেও পেডিয়াট্রিক্স ওয়ার্ডে ভরা গ্রীষ্মে ভিড় বাড়ছে। একই উপসর্গ। একই চিকিৎসা। তাই সুস্থ রাখতে ভরসা মাস্ক। অন্তত তিন ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকানো সম্ভব।
[আরও পড়ুন: ছানি অপরেশনে ঢিলেমি করলেই বিপদ, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞ]
ঘটনা হল, অ্যাডিনো ভাইরাস শরীরে বাসা বাঁধলে জ্বর হয়। সঙ্গে কাশি। গায়ে র্যাশ ওঠে। তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে বাচ্চার জ্বর না কমায় ডাক্তারের কাছে যখন আনা হয় ততক্ষণে অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে। অ্যাডিনোর সঙ্গে শরীরে ঢুকে পড়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জার ভাইরাস। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের অধ্যক্ষ ডা. জয়দেব রায় বলেছেন, “গরমে ২৪ ঘণ্টার বেশি জ্বর থাকলে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। যত দেরি হবে ততই সমস্যা বাড়বে। কারণ বাচ্চাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত কম।”
জয়দেব বাবুর কথায়, জ্বর-সর্দি হলে বাড়িতে থাকতে হবে। ফল জুস, জল, হালকা খাবার খেতে হবে। বেশি খেতে হবে। এমনকী সুস্থ হওয়ার পরেও সাতদিন বাড়িতে থাকতে হবে। কারণ রোগ ফিরে আসতে পারে।” কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ মিহির সরকারের কথায়, “অনেক সময় দেখছি ২-৩ দিনের জ্বর-সর্দিকে মা-বাবা তেমন গুরুত্ব দেন না। এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক প্রবণতা। কারণ একইসঙ্গে একাধিক ভাইরাসে কাবু হচ্ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা অথবা অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ হলে প্রথমে চিকিৎসা হলে রোগ সারতে সময় লাগে না। কিন্তু নিউমোনিয়া সংক্রমণ হলেই অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে যায়।”
বি সি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষ দিলীপ পালের জানান, “গরমে বাচ্চার জ্বর হলে ভাবা হয় সামান্য সর্দিগর্মি। বাড়িতে থাকলেই কমে যাবে। এমন ধারণা খুব খারাপ। প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় বাড়িতে কারও ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে ও বাচ্চাদের যতটা সম্ভব আলাদা করে রাখা দরকার। অন্তত মাস্ক পরে থাকতে হবে।”