সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বন্যেরা বনে সুন্দর…। বন্যেরা বনেই স্বাধীন। কিন্তু সেই স্বাধীনতা তো অনেক সময়েই মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন। দ্বিপদ মানুষের হাতে বন্দি চতুষ্পদীরা। তবে এই কাহিনি বন্দিত্বের নয়, মুক্তির। মানুষের হাতে বন্যপ্রাণীর মুক্তি। আর সেই স্বাদ পেয়ে মানবতের প্রাণী কিন্তু কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেনি। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, খাঁচা থেকে জঙ্গলের সবুজের মাঝে বেরতে পেরে আহ্লাদে আটখানা শিম্পাঞ্জি (chimpanzee) লাফিয়ে উঠে পরম আদরে জড়িয়ে ধরল তার মুক্তিদাতাকে! সে আলিঙ্গনদৃশ্য দেখে আবেগের স্রোত যেন বাঁধ মানে না। মনে হয়, মানুষ-বন্যপ্রাণের চিরবন্ধন এভাবে স্থায়ী হোক।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি (Viral Video) আসলে বেশ কয়েক বছর আগের। কিন্তু আবার তা সামনে এনেছেন সুধা রমন নামে এক বন আধিকারিক। ১৪ জুলাই ছিল বিশ্ব শিম্পাঞ্জি দিবস। সেই দিনই সুধা রমনের টুইট করা ভিডিওটি ঝড় তুলেছে নেটদুনিয়ায়। মন ভাল করা ভিডিওটি কতবার যে রিটুইট, শেয়ার হয়েছে, তার হিসেব করা দায়। কী দেখা গেল তাতে? জেন গুডঅল নামে এক বিখ্যাত বানর বিশেষজ্ঞ তাঁর সঙ্গীসাথীদের নিয়ে গিয়েছেন এক শিম্পাঞ্জিকে উদ্ধার করতে। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে খাঁচাবন্দি ছিল শিম্পাঞ্জি। এবার তাকে লোহার ঘর থেকে বের করে এনে প্রকৃতির বুকে ছেড়ে দেওয়ার পালা।
[আরও পড়ুন: সে কী! ৩২ নয়, বিহারের এই কিশোরের মুখে ছিল ৮২টি দাঁত!]
এক বিচ্ছিন্ন সবুজ দ্বীপে তাকে নিয়ে গিয়ে যখন ছেড়ে দিলেন জেন গুডঅল, প্রথমেই দেখা গেল, চারপেয়ে কৃষ্ণবর্ণ প্রাণীটি প্রবল উচ্ছ্বাসে খানিকক্ষণ ঘুরেফিরে নিল। তারপর একবার খাঁচার কাছে মুহূর্তের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ল জেনের কোলে। তার গলা জড়িয়ে ধরে এমনভাবে আলিঙ্গন করল যা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। অবলা প্রাণীর এই ভালবাসা, কৃতজ্ঞতার এই ভাষা একবিন্দুও অসুবিধা হয়নি জেনেরও। কারণ, তিনি তো জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই কাটিয়েছেন এঁদের নিয়ে। তাই সদ্য মুক্তির স্বাদ পাওয়া শিম্পাঞ্জির শরীরীভাষা বিনিময় করেছেন তিনিও। এই ছবিই বলে দেয়, যে মানুষের হাতে মানবেতর প্রজাতির বন্দিত্ব, সেই মানুষের হাত ধরেই যদি বন্ধনমুক্ত হয়ে স্বস্থানে ফিরতে পারে তারা, তবে সেই ভাল লাগার প্রকাশও ঘটায়। বন্যপ্রাণী মানেই কেবল হিংস্রতার বশবর্তী নয়, সে জানে কৃতজ্ঞ হতে, ভালবাসতেও।